রবিবার ৬০ বছর হল দূরদর্শনের। ১৯৫৯ সালে দূরদর্শন চালু হয়েছিল। ভারতীয় টেলিভিনের স্বর্ণযুগের সূচনা তার হাত ধরেই।
দূরদর্শন শুরু হয়েছিল গোটা পরিবারকে একসঙ্গে ধরে রাখার ভাবনা থেকে- সে সমাচার হোক অথবা সান্ধ্য শো, আঞ্চলিক এন্টারটেনমনেন্ট হোক কি জাতীয় প্রোগ্রাম অথবা স্পোর্টস।
দূরদর্শনের লোগো
দূূরদর্শনের লোগো মানবচক্ষুর প্রতীক। দূরদর্শন ব্র্যান্ডের নস্টালজিয়া এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। এর আগে, বছরের শুরুতে দূরদর্শন তাদের লোগো বদলের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। সারা দেশে মোট ২৩টি চ্যানেল চালায় দূরদর্শন। সেগুলির মাধ্যমে লোগো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। বিজেতা ১ লক্ষ টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে।
আধুনিকীকরণ ও নেটওয়ার্ককে ঢেলে সাজানোর জন্যই এই পদক্ষেপ।
শুরু তত বড় নয়
১৯৫৯ সালে অল ইন্ডিয়া রেডিওর স্টুডিওতে একটি ছোট ট্রান্সমিটার ও অস্থায়ী স্টুডিও নিয়ে কাজ শুরু করে দূরদর্শন। ৬ বছর পর, ১৯৬৫ সালে প্রতিমা পুরী প্রথম পাঁচ মিনিটের সংবাদ পাঠ করেন দূরদর্শনে। তিনি ইউরি গ্যাগারিনের সাক্ষাৎকারও নিয়েছিলেন।
ততদিন পর্যন্ত দৈনিক সম্প্রচারের দায়িত্বে ছিল অল ইন্ডিয়া রেডিওই।
১৯৮২ সালের ১৫ অগাস্ট দূরদর্শন জাতীয় টেলি সম্প্রচার করে নয়া দিল্লিতে তাদের নিজস্ব স্টুডিও থেকে, যার নাম ডিডি১। সে বছরেই স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর ভাষণের সরাসরি রঙিন সম্প্রচার প্রত্যক্ষ করেন দর্শকরা। এর পর দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসের রঙিন সম্প্রচার।
#60GloriousYearsOfDD @shashidigital, CEO @prasarbharati shares his views on completion of 60 years of #Doordarshan.@MIB_India @PIB_India @mediasurya @supriyasahuias @DDNewsLive @airnewsalerts @AkashvaniAIR pic.twitter.com/iYW4FkDrj7
— Doordarshan National (@DDNational) September 15, 2019
দুরদর্শনে সম্প্রচারিত বহু শো ক্লাসিকে পরিণত বয়েছে। ৮-এর দশকের শেষ থেকে ৯ এর দশের গোড়া পর্যন্ত মানুষের মন জয় করে নিয়েছিল তু তু ম্যাঁয় ম্যাঁয়, মহাভারত, দেখ ভাই দেখ, উড়ান, ফৌজি, মালগুডি ডেজ-এর মত শো গুলি।
দূরদর্শন প্রযোজনা করেছিল কৃষি দর্শন, যা কৃষির সম্পর্কিত দীর্ঘতম টিভি শো। ১৯৬৭ সালে তা প্রথম সম্প্রচারিত হয় এবং প্রদর্শিত হয়ে ৮০টি গ্রামে। ২০১৪ সালে কিষাণ টিভি নামে একটি কৃষি ভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল শুরু করার পর ওই শো-টি বন্ধ করা হয়।
প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্তশাসন
৯ এর দশকে অল ইন্ডিয়া রেডিও ও দূরদর্শন সরকারের সরাসরি নিয়ন্ত্রণে আসে। সংসদে এ ইস্যু নিয়ে আলোচনা হওয়ায় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় প্রাতিষ্ঠানিক স্বায়ত্তশাসন অক্ষুণ্ণ থাকবে, এবং সে নিয়ে একটি আইনও পাশ হয়।
এ বছর লোকসভা ভোটের আগে দূরদর্শনে রাজনৈতিক কভারেজ নিয়ে প্রশ্ন তোলে নির্বাচন কমিশন। জানা গিয়েছিল ডিডি নিউজে সবচেয়ে বেশি এয়ারটাইম পেয়েছে বিজেপি। এরপরেই ছিল কংগ্রেসের স্থান।
আজকের দূরদর্শন
টিভি ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপক বাড়বাড়ন্তের জমানায় দূরদর্শন বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে। ১৯৯১ সালে আর্থি সংস্কার এবং তথ্য প্রযুক্তিতে লিবারালাইজেশনের ফলে বহু বিদেশি ও ভারতীয় মিডিয়া সংস্থা টেলিভিশন জগতে প্রবেশ করেছে।
১৯৯১ সালে যেথানে একটি মাত্র লাইসেন্স প্রাপ্ত চ্যানেল ছিল, সেখানে এখন সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০০-র বেশিতে। প্রথম ২৪ ঘন্টার খবরের চ্যানেল শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, ২০১৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪০০ তে এবং এখনও তার বাড়বৃদ্ধি চলছেই
তবে এত চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়েও দুরদর্শন কিন্তু থেমে থাকেনি। এ বছরের গোড়ায় ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে সে দেশে দুরদর্শন চ্যানেল দেখানোর চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এ ছাড়া প্রসার ভারতী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের উপর নির্মিত একটি ফিচার ফিল্মও সহ প্রযোজনার কাজ করবে। ওই চলচ্চিত্রটির পরিচালনা করবেন শ্যাম বেনেগাল। এ ছাড়া বাংসাদেশ মুক্তিযুদ্ধের উপর নির্মিত একটি তথ্যচিত্রতেও সহ প্রযোজনা করবে প্রসার ভারতী।
৬০ বছর বয়স হল বটে, তবে অবসরের কোনও পরিকল্পনা নেই দূরদর্শনের।
Read the Full Story in English