হায়দ্রাবাদে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ল্যাবরেটরি-র (ডিআরডিএল) এক ইঞ্জিনিয়ারকে গ্রেফতার করেছে তেলেঙ্গানা পুলিশ। ধৃত ডুক্কা মল্লিকার্জুন রেড্ডি। সে হানিট্র্যাপের শিকার বলে পুলিশ মনে করছে। পুলিশের অভিযোগ, ডুক্কা ভারতীয় ক্ষেপনাস্ত্রের বিভিন্ন তথ্য পাকিস্তানি গুপ্তচরকে পাচার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, গুপ্তচর ব্রিটেনের ডিফেন্স জার্নালে কর্মরত মহিলা বলেই দাবি করেছিল।
অভিযুক্ত, ডুক্কা মল্লিকার্জুন রেড্ডি (২৯), বিশাখাপত্তনমের বাসিন্দা। সে বালাপুরের রিসার্চ সেন্টার ইমারতে (আরসিআই) ডিআরডিএল-এর অ্যাডভান্স নেভাল সিস্টেম প্রোগ্রামের চুক্তিভিত্তিক কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, রাচাকোন্ডা পুলিশের বিশেষ অপারেশন টিম (এলবি নগর জোন) এবং বালাপুর পুলিশের যৌথ অভিযানে ডুক্কাকে মীরপেটে তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা ৪০৯ (বিশ্বাসের অপরাধমূলক লঙ্ঘন) এবং অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯২৩ এর বিভিন্ন ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ ধৃত ডুক্কার কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন, একটি সিম কার্ড এবং একটি ল্যাপটপ বাজেয়াপ্ত করেছে।
পুলিশের মতে, ধৃত ডুক্কা মল্লিকার্জুন রেড্ডি ডিআরডিএল প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত একটি বেসরকারি সংস্থায় দু'বছর কাজ করেছিলেন। পরে সে ডিআরডিএল-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং ২০২০ সালে এএনএসপি প্রকল্পে চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী হিসাবে কাজে যোগ দেন। ডুক্কা তাঁর তার ফেসবুক প্রোফাইলে ডিআরডিএল-এর একজন কর্মী বলেই উল্লেখ করেছেন। অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ার ডুক্কা গত প্রায় দুই বছর ধরে নাতাশা রাও, ওরফে সিমরান চোপড়া ওরফে ওমিশা আদ্দির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। আদতে যা একটি হানিট্র্যাপ বলে মনে করা হচ্ছে। এইসময়কালেই সে ভারতীয় মিসাইলের নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাচার করেছেন বলে জানা যাচ্ছে। সন্দেহভাজন আইএসআই হ্যান্ডলারের সঙ্গে নিজের ফেসবুকের মাধ্যমে তিনি আরসিআই-তে ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচী সম্পর্কিত ছবি এবং নথি শেয়ার করেছেন বলে পুলিশের অভিযোগ।
বিবৃতি উল্লেখ, ২০২০ সালের মার্চ মাসে, অভিযুক্ত মল্লিকার্জুন রেড্ডিকে ফেসবুকে নাতাশা রাও নামের একজন বন্ধুত্বের অনুরোধ পাঠান। তিনি সেই অনুরোধ গ্রহণ করেন। নাতাশা তখন জানিয়েছিলেন যে, সে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষা জার্নালের একজন কর্মচারী এবং প্রকাশনার কাজে যুক্ত। সে আগে ভারতের বেঙ্গালুরুতে থাকতেন। বলেও দাবি করেন। নাতাশা ডুক্কাকে জানিয়েছিলেন যে, তাঁর বাবা ভারতীয় বিমান বাহিনীতে কাজ করতেন এবং পরে ব্রিটেনে চলে যান। এরপরই নাতাশা ফেসবুকেই ডুক্কার পেশা, কাজের পরিধি এবং সংস্থার সম্পর্কে জানতে চান। এভাবেই তাদের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। একসময় নাতাশা রাওয়ের কাছে ডুক্কা মল্লিকার্জুন রেড্ডি দেশের প্রতিরক্ষা ও মিসাইল কার্যক্রম নিয়ে গোপন তথ্য জানিয়েছেন। আরও, অভিযোগ যে, তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বরও নাতাশা রাওকেদিয়েছিলেন ডুক্কা। নাতাশার সঙ্গে ডুক্কার যোগাযোগ ছিল ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।