দীর্ঘদিন ধরেই আলাদা ধর্মের স্বীকৃতির দাবি জানাচ্ছেন ভারতের আদিবাসীরা। এই ধর্ম হল 'সারনা'। আদিবাসীদের দাবি, এই 'সারনা'ই তাঁদের আসল ধর্ম। কিন্তু, আজ অবধি তাকে ধর্মের স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। এবার অবশ্য আদিবাসীরা কিছু একটা হওয়ার আশা রাখছেন। কারণ, এই প্রথমবার ভারতের ইতিহাসে এক আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী। আর, সেই পদের দৌড়ে তিনিই এগিয়ে। তাই কিছু একটা হলেও হতে পারে বলেই বিশ্বাস 'সারনা' ধর্মের স্বীকৃতির দাবিতে আন্দোলনকারী আদিবাসীদের।
যদিও, আদিবাসীদের এই দাবি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) ভাবনার সঙ্গে কোনওমতেই খাপ খায় না। কারণ, সংঘ পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই আদিবাসীদের হিন্দুত্বে ফেরানোর কাজ করে চলেছে। যদিও এই ফেরানো শব্দে আদিবাসীদের ব্যাপক আপত্তি রয়েছে। তাদের দাবি, আদিবাসীরা কোনওদিনই হিন্দু ছিল না।
তাদের ধর্ম আলাদা। কিন্তু, সেই ধর্মকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। বদলে, হিন্দুত্ব চাপিয়ে দিয়ে তাদের ধর্মকে অস্বীকার করার চেষ্টা চালাচ্ছে সংঘ পরিবার। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (জেএমএম)-সহ বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনগুলোর এই অভিযোগ তোলার পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরেই আদমসুমারির সময় ধর্মীয় স্থানের জায়গায় 'সারনা'র নামও রাখার দাবি জানিয়েছে।
আরও পড়ুন- দমতে নারাজ উদ্ধব, ফের চ্যালেঞ্জের মুখে শিণ্ডে-বিজেপি জোট
আদিবাসী সংগঠনগুলোর দাবি, তারা কোনওদিনই হিন্দুদের মত মূর্তিপুজোয় বিশ্বাস করে না। পরিবর্তে তারা প্রাকৃতিক শক্তিকে সম্মান করে। তার পুজো করে। তা সে বন হতে পারে। পাহাড় হতে পারে। নদী হতে পারে অথবা ভূমি হতে পারে। কিন্তু, আদমসুমারিতে 'সারনা' ধর্মের কোনও নাম নেই। আদিবাসীরা সেই জন্য ফর্ম ফিলাপের সময় নিজেদের ধর্মের জায়গায় 'অন্যান্য ধর্ম' শব্দটি লিখে দেন।
দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর কি আদিবাসীদের সেই সমস্যা মিটবে? দ্রৌপদী মুর্মু রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ার পর সেই প্রশ্ন এখনও জোরালো ভাবে উঠতে শুরু করেছে। অতি সম্প্রতি সাঁওতাল হুল বিদ্রোহের বার্ষিকীতে এই প্রশ্ন ঘুরেফিরে এসেছে। প্রাক্তন বিজেপি সাংসদ সালখান মুর্মু 'সারনা' ধর্মকে স্বীকৃতির দাবিতে গত ৩০ জুন যন্তর-মন্তরে 'আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযান' সংগঠনের ব্যানারে প্রতিবাদও জানিয়েছেন। দাবি করেছেন, ভারতজুড়ে আদিবাসী সম্প্রদায়ের 'ক্ষমতায়ন'-এর। সেই ক্ষমতায়নের পক্ষে প্রধান দাবিই ছিল, 'সারনা'কে ধর্মের স্বীকৃতি দেওয়া।
Read full story in English