সন্ত্রাসবাদের চেয়েও বড় হুমকি হয়ে উঠছে মাদক চোরাচালান। নিশানা করা হচ্ছে ১৩-৩০ বছরের যুবকদের। মাদক পাচার সমস্যার মোকাবিলা করতে না পারলে তা আগামীর জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে। এমনই আশঙ্কার কথা প্রকাশ করলেন জম্মু ও কাশ্মীরের পুলিশের ডিজিপি দিলবাগ সিং।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন পাঞ্জাব এবং জম্মু-কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের চেয়েও বড় হুমকি হয়ে উঠছে মাদক পাচার। তিনি আরও বলেন, 'উপত্যকায় মাদকের মহামারী ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা যদি সময়মতো মনোযোগ না দিই এবং এখন থেকে মাদকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে না যাই, তাহলে কঠিন ভবিষ্যৎ আমদের জন্য অপেক্ষা করছে।
মাদক পাচার প্রসঙ্গে ডিজিপি বলেন, “মাদক চোরাচালান ও অবৈধ ব্যবসা একটি বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এটি জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য চরমপন্থার চেয়েও বড় হুমকি। সন্ত্রাসবাদ নানাভাবে সমাজের জন্য মৃত্যু, ধ্বংস ও দুর্ভোগ ডেকে আনে। যাইহোক, যদি আমরা মনোযোগ না দিই এবং আজ মাদকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এগিয়ে না যাই, তাহলে আরও বড় যন্ত্রণা আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।
জম্মু ও কাশ্মীরে অশান্তি ছড়াতে কৌশল পাল্টেছে পাকিস্তান
ডিজিপি দিলবাগ সিং বলেছেন যে পাকিস্তানী এজেন্সিগুলি, যারা আগে সন্ত্রাসবাদকে আশ্রয় দিত, তারা এখন একটি নতুন নীতি গ্রহণ করেছে এবং সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের জন্য মাদককে ব্যবহার করছে। মাদকের মাধ্যমে সন্ত্রাসকে সামাজিক অপরাধের সঙ্গে মিশিয়ে সমাজের ক্ষতি করার চেষ্টা তাদের। জম্মু ও কাশ্মীরের জনগণকে যারা সন্ত্রাসের চেয়ে শান্তি পছন্দ করেছে তাদের মধ্যে বিষ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য তারা নতুন নীতি গ্রহণ করেছে। জম্মু ও কাশ্মীরের ডিজিপি সতর্ক করে বলেন, শত্রুরা পাঞ্জাবেও একই নীতি গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, পাঞ্জাবে জঙ্গি কার্যকলাপ অনেক আগেই শেষ হয়েছে, কিন্তু মাদকের আতঙ্ক আগের মতোই রয়ে গেছে। জম্মু ও কাশ্মীরেও একই রকম কিছু করার চেষ্টা করা হচ্ছে পাক এজেন্সিগুলি। দিলবাগ সিং বলেছেন যে গত ৪ বছরে জম্মু ও কাশ্মীরে মাদক সংক্রান্ত মামলা এবং গ্রেফতারের সংখ্যা উভয়ই বেড়েছে। ১.৩ কোটি জনসংখ্যার ৫-৭ লাখ যুবক যাদের বয়স ১৩-৩০ বছরের মধ্যে তাদের মধ্যেই মাদকের বিষ ছড়িয়ে দেওয়া চেষ্টা চালাচ্ছে পাক এজেন্সিগুলি।
সীমান্তবর্তী গ্রামগুলি অর্থনৈতিক সুবিধার জন্য লোকজন মাদক ব্যবসায় যোগ দিচ্ছে
ডিজিপি আরও বলেছেন, সহজে অর্থ উপার্জনের লোভে সীমান্ত এলাকার কিছু লোক মাদক ব্যবসায়ে যোগ দিয়েছেন। নগদের একটি অংশ পাকিস্তানে যায়। এমনকী স্থানীয়ভাবে ক্রিপ্টোকারেন্সিতেও কিছু পেমেন্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
লস্কর প্রধানত এর সঙ্গে জড়িত কিছু ক্ষেত্রে জইশও
দিলবাগ সিং মাদক মামলা প্রসঙ্গে ২০২২-২০২৩ সালে, মাদক-সন্ত্রাসের প্রায় ২০ টি গুরুতর মামলার উল্লেখ করেন। তিনি বলেন প্রতি ক্ষেত্রেই আমরা তদন্ত করছি । লক্ষ্য করা গিয়েছে মাদক এবং অস্ত্র বা আইইডি - ড্রোনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়েছে। এই কাজে জঙ্গি সংগঠন লস্কর, এবং কিছু ক্ষেত্রে জইশও জড়িত বলে প্রমাণ মিলেছে। পুলিশ চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযান চালাচ্ছে।