মাত্র এক মাসের অপেক্ষা। ইতিমধ্য়েই বাজতে শুরু করেছে আগমনীর সুর। কলকাতার পুজো মানেই সেই চেনা ভিড়। রাস্তার ধারে সেই বাঁশের ব্য়ারিকেড। লাখো লাখো দর্শনার্থীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে দুর্গাপ্রতিমার সাজ দেখতে পারেন, সে ব্য়বস্থা করার কসুর করে না কলকাতা পুলিশ। পুজো উদ্য়োক্তারাও তাঁদের নিজের নিজের পুজোর জন্য় সুষ্ঠু আয়োজনেরও খামতি রাখেন না। এবারের পুজো কেমন করে কাটাবে তিলোত্তমা? তারই যেন একটা প্ল্য়ান তৈরি হয়ে গেল সমন্বয় বৈঠকে। কলকাতা পুলিশের উদ্য়োগে আয়োজিত প্রাক পুজো সমন্বয় বৈঠকে সমস্য়ার কথা যেমন শোনালেন পুজো উদ্যোক্তারা, তেমনই দিলেন বিভিন্ন প্রস্তাব।
পুজোর সমন্বয় বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনায় জোর দিলেন দিলেন শহরের পুজো উদ্য়োক্তারা, তার মধ্য়ে উল্লেখযোগ্য় হল...
১. এবারের পুজোয় সবার নজর ট্রাফিকের দিকে। সদ্য় মাঝেরহাট ব্রিজ বিপর্যয়ের সাক্ষী হয়েছে শহর কলকাতা। যার জেরে বেহালা, নিউ আলিপুর এলাকা যেতে হলে, কার্যত হিমশিম খেতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণকে। পুজো মানেই তো সেই বাড়তি ভিড়। মাঝেরহাট ব্রিজ নেই, কীভাবে সামাল দেওয়া হবে? বেহালার ঠাকুর দেখতে পাবেন তো দর্শনার্থীরা? এ উদ্বেগ ছিলই। স্বাভাবিক ভাবেই এ প্রশ্নই তুললেন বেহালার বেশ কয়েকটি পুজো কমিটি। পুজোর সময় যাতে ট্রাফিক সমস্য়া না হয়, তা মোকাবিলা করার আর্জি জানালেন তাঁরা।
২. পুজোর সময় ওই এলাকায় যাতে লরি চলাচল না করে, সে ব্য়াপারেও পুলিশের কাছে প্রস্তাব দেন বেহালা এলাকার এক পুজো উদ্য়োক্তা।
৩. পুজো মানেই সারারাত জেগে টো টো করে ঠাকুর দেখা। পুজোর সময় ঘড়ির কাঁটার দিকে কারওরই নজর থাকে না। তাই রাত বারোটা হোক কিংবা ভোর ৪টে, কলকাতার রাজপথ আলো করে থাকে মানুষের ভিড়। ভোরে যাতে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন থাকে, সে ব্য়াপারেও আর্জি জানালেন কয়েকজন পুজো উদ্য়োক্তা। তবে সবসময়ই রাস্তায় পুলিশ থাকবে বলে আশ্বস্ত করা হয় কলকাতা পুলিশের তরফে।
৪. পুজোর সময় যাতে মহিলা পুলিশকর্মী বেশি করে মোতায়েন করা হয়, সে ব্য়াপারেও আলোকপাত করা হয় পুজো কমিটিগুলির তরফে।
৫. শহরের কিছু রাস্তা বেহাল, তা ঠিক করার আর্জিও জানান কয়েকজন পুজো উদ্য়োক্তা।
আরও পড়ুন, পুজো কমিটিগুলিকে উপহার মুখ্যমন্ত্রীর, ২৩ অক্টোবর কার্নিভাল
অন্য়দিকে, এবার শহরের ৩ হাজার পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন রাজ্য়ের মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। সেই টাকা অনলাইনে লেনদেনের জন্য় পুজো কমিটিগুলিকে বলা হয় কলকাতা পুলিশের তরফে। পাশাপাশি এবারের পুজোয় স্পেশাল চাইল্ডরা যাতে ভালভাবে প্রতিমা দর্শন করতে পারে, সেজন্য় ব্য়বস্থা নেওয়ার কথা পুজো কমিটিকে বলা হয়েছে।
এবারের পুজোয় ট্রাফিক সমস্য়া একটা চ্য়ালেঞ্জ, একথা নেতাজি ইন্ডোরের বৈঠকেই বলেছিলেন কলকাতার নগরপাল রাজীব কুমার। এদিনের বৈঠকেও তিনি আশ্বস্ত করলেন যে, গতবারের মতোই কলকাতা শহরের ট্রাফিক ব্য়বস্থা ঠিকঠাক থাকবে।
পুজো মানেই মাইকের দাপাদাপি। গ্রিন ট্রাইব্য়ুনালের নির্দেশ মেনেই যাতে পুজো কমিটিগুলি মাইক ব্য়বহার করে, সে পরামর্শও দেওয়া হয় এদিনের বৈঠকে।