গতকাল রাতে হৃদ প্রতিস্থাপন হল আনন্দপুরের ফোর্টিস হাসপাতালে। ভিন রাজ্য থেকে নিয়ে আসা হয় হৃদযন্ত্র। ঘড়িতে তখন রাত ১১.৩০। রবিবারের রাতে রাস্তাঘাটের ট্রাফিক একটু হালকা ছিল। গ্রিন করিডোর ধরে ওই অঙ্গ আনন্দপুরে ফোর্টিসে পৌঁছয় মাত্র ১৬ মিনিটে। পূর্বভারতে দ্বিতীয়বারের এই হৃদ প্রতিস্থাপন ঘটনার সাক্ষী থাকল রাতের শহর কলকাতা।
রাতভর চলে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপারেশন। তামিলনাড়ুর ফর্টিস থেকে ট্রান্সপ্লান্ট সার্জেন কে আর বালাকৃষ্ণের নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল এসে পৌঁছয় কলকাতায়। তাদের উপস্থিতিতে এবং ফোর্টিসের কার্ডিয়াক সার্জেন তাপস রায়চৌধুরীর তত্বাবধানে শুরু হয় প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া। সকালবেলা জানা গেছে, অপারেশনে সফল হয়েছেন ওই চিকিৎসকরা।
অন্ধ্রপ্রদেশের কাকিনাড়া অ্যাপোলো থেকে নিয়ে আসা হৃদযন্ত্র। ওই রাজ্যে ২৪ বছর বয়সী এক তরুণ দুর্ঘটনার কবলে পড়েন। হৃদয় সচল থাকলেও মস্তিষ্কের মৃত্যু ঘটে তাঁর। এদিকে কলকাতায় ৫২ বছর বয়সী সমীরণ দত্তের জন্য খোঁজা হচ্ছিল এ পজিটিভ গ্রুপের এই জীবনদায়ী অঙ্গ। কারণ বেশ কয়েক মাস ধরেই Dilated Cardiomyopathy রোগে আক্রান্ত সমীরণবাবু। তাঁকে বাঁচানোর জন্য হৃদ প্রতিস্থাপনই একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই অবস্থায়।
অপারেশনের পর, বর্তমানে সমীরণবাবুকে ৭২ ঘণ্টার ভেণ্টিলেশনে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।রক্তে কোনো সংক্রমণ হচ্ছে কিনা তার দিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে পূর্বভারতে প্রথম সফল ভাবে হৃদযন্ত্র প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল দিলচাঁদ সিংহর। মে মাসে সফল অস্ত্রোপচার এর কথা জানানো হয়েছিল হাসপাতালের পক্ষ থেকে। সেবার হৃদযন্ত্র এসে পৌঁছতে সময় লেগেছিল ২ ঘণ্টা। তাতেও প্রথমবার সফল ভাবে প্রতিস্থাপন করা হয় হৃদযন্ত্র।
সেবারও বেঙ্গালুরুর এক যুবক দুর্ঘটনার শিকার হন। চিকিৎসক তাঁর ব্রেন ডেথের খবর ঘোষণা করলে পরিবার সিদ্ধান্তে অঙ্গ বেঙ্গালুরু থেকে উড়িয়ে নিয়ে আসা হয় কলকাতায়। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে আনন্দপুর ফোর্টিস হাসপাতাল পর্যন্ত তৈরি করা গ্রিন করিডোর ধরে হৃদযন্ত্র পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল ২২ মিনিটে।