প্যাংগং হ্রদের ধারে ২০২০ সালের মে মাসে তীব্র সংঘর্ষে জড়িয়েছিল ভারত ও চিন সেনা৷ আবারও চিনের আগ্রাসনে বেড়েছে উদ্বেগ। এবার প্যাংগং হ্রদের (Pangong Lake) উপর সেতু নির্মাণ করছে চিন। উপগ্রহ চিত্রের মাধ্যমে এই ছবি ধরা পড়েছে। যা নিয়ে রক্তচাপ বেড়েছে দিল্লির।
ভূ-গোয়েন্দা বিশেষজ্ঞ ড্যামিয়েন সাইমন উপগ্রহ চিত্র টুইট করে দাবি করেছেন, প্যাংগং হ্রদের উপরে সেতু নির্মাণ করছে বেজিং। এই সেতু তৈরি হয়ে গেলে খুব কম সময়ের মধ্যে সীমান্তে পৌঁছে যাবে লালসেনা। বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, ভারতকে চাপে রাখতেই চিন এই সেতু তৈরি করছে। যদিও যে স্থানে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে সেটি চিনের সীমান্ত অংশের মধ্যে পড়ে। তাও এই সেতু নির্মাণে লাল সেনার অন্য মতলব আঁচ করছে, ভারত।
হ্রদের দুইদিক জুড়ে ফেলতে পারলে চিন অতি দ্রুত সৈন্য ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র পারাপার করতে পারবে৷ সাইমন টুইটে দাবি করেছেন, হ্রদের একটি সংকীর্ণ অংশে সেতুটি তৈরি করা হচ্ছে৷ সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে মাত্র কয়েকমিটার দুরেই এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ হলে ভারতের বিরুদ্ধে সেনা এবং যুদ্ধসরঞ্জাম জড়ো করতে চিন আরও সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে যাবে বলে মত কূটনীতিকদের। একই সঙ্গে প্যাংগংয়ের দুই তীরেই তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথ আরও প্রশস্ত হবে। প্যাংগংয়ের উত্তর তীরের ফিঙ্গার ৮ থেকে ২০ কিলোমিটার পূর্বে সেতুটি নির্মাণ করা হচ্ছে।
চিনা বাহিনী যেখানে শিবির গড়ে রয়েছে, সেই রুতং কাউন্টির খুরনাক ফোর্টের পূর্বে রয়েছে সেতুটি। ২০২০-র মে মাসে থেকে ভারত-চিন সংঘাত যত তীব্র হয়েছে, ততই ওই এলাকায় পরিকাঠামোয় জোর দিয়েছে চিন। নয়া নির্মীয়মান সেতুটি ছাড়াও সেখানে রাস্তা, বিমান অবতরণ ক্ষেত্র গড়ে তুলেছে তারা।
২০২০ সাল থেকে পূর্ব লাদাখে ভারত এবং চিন, দুই তরফেই ৫০ হাজার করে সেনা মোতায়েন রয়েছে। দেপসাং, দেমচক-সহ একাধিক জায়গায় কার্যত মুখোমুখি অবস্থান করছে দু’পক্ষ। সেনা তুলে নিতে দফায় দফায় আলোচনাও হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। কিন্তু তাতেও বরফ গলেনি। বরং বিগত কয়েক মাস ধরে অরুণাচলপ্রদেশেও চিনা আগ্রাসন দেখা গিয়েছে। সেখানের বিস্তীর্ণ এলাকা দখল করে একাধিক গ্রাম গড়ে তোলা হয়েছে বলে চিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সামনে এসেছে। নতুন বছরের শুরুতেই এই খবর সামনে আসতে ফের অস্বস্তি বাড়ল দিল্লির বলে মনে করছেন কূটনৈতিক মহল।