নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের দায়ে বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপুল সম্পত্তির হদিশ পেতে শনিবার হুগলিতে ম্যারাথন অভিযান চালায় ইডি। শুরুতেই ব্যান্ডেলের বালির মোড় এবং ব্যান্ডেল চার্চের কাছের দু’টি বাড়িতে পৌঁছায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল। পাশাপাশি বলাগড়ের চাদরার একটি রিসর্টেও চলে তল্লাশি। বালির মোড়ের দোতলা বাড়িতে প্রবেশের জন্য তালা ভাঙার চেষ্টা করেন ইডি আধিকারিকরা। পরে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে ভিতরে ঢোকেন তারা। এসবের মধ্যেই ইডি গোয়েন্দারা জানতে পারেন যে, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি ফ্ল্যাট চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায়। সেই বাড়িতেও যায় ইডির একটি দল। কিন্তু সেই ফ্ল্যাটের চাবি মেলেনি। কিন্তু ওই ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালাতে মরিয়া ছিল গোয়েন্দারা। ফ্ল্যাটের চাবি জোগাড়ে গোয়েন্দা দল সরাসরি ওই ফ্ল্যাটের প্রোমোটার অয়ন শীলের সল্টলেকের এফডি ব্লকের ৩৮৮ নম্বর বাড়িতে পৌঁছান। সন্ধ্যা নামার পরও এফডি ব্লকের ওই বাড়ির বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা ঘিরে রেখেছেন।
অয়ন অবশ্য সেই সময় ফ্ল্যাটে ছিলেন না। তবে খোঁজ মেলে অয়নের বাড়ির মালিক শৈবাল চক্রবর্তীর। তাঁর দাবি, সল্টলেকের ওই ফ্ল্যাটটি তিন বছর আগে ভাড়া নিয়েছিলেন অয়ন শীল। গোয়েন্দা দল অয়নকে প্রোমোটার বলে জানলেও বাড়ির মালিক জানান, অয়ন শীল প্রোডাকশন হাউসের কাজের জন্য বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিলেন। সে টালিগঞ্জের এক প্রখ্যাত পরিচালকের সঙ্গে ছবিও তৈরি করেছেন। এছাড়াও শৈবালবাবুর দাবি, অয়ন শীল এদিন সকালেই বাড়ি থেকে বেরিয়ে চন্দননগরে চলে গিয়েছেন। ইডি-র জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হতেই গিয়েছেন বলে বাড়ির মালিককে নাকি বলে গিয়েছেন তিনি।
সল্টলেকের যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন অয়ন শীল, সেখানেই ছিল তাঁর প্রোডাকশন হাউসের দফতর। তাঁর ছেলে ও স্ত্রী থাকে দিল্লিতে। সেখানেই ছেলে স্কুলে পড়ে। তবে ওই বাড়িতে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে বহিষ্কৃত যুব তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় বা কুন্তল ঘোষকে দেখেননি বলেই দাবি করেছেন এফডি ব্লকের ৩৮৮ নম্বর বাড়ির মালিক।
প্রমোটার অয়ন শীলের থেকে কত টাকায়, কোন চুক্তিতে চুঁচুড়া জগুদাসপাড়ায় ফ্ল্যাট শান্তনু কিনেছিলেন সেই সংক্রান্ত নথি-পত্র, আর্থিক লেন-দেন সম্পর্কেই জানতে চায় ইডি। এছাড়া প্রোডাকশন হাউস চালাতে কোথা থেকে অয়ন টাকা পেতেন? সেই টাকা কী নিয়োগ দুর্নীতিতে থেকে প্রাপ্ত? সেসবও জানতে মুখিয়ে রয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।