আগামী ২ মে ভোট গণনার দিন বা তার পরে যে কোনও ধরনের বিজয় মিছিল নিষিদ্ধ করল কমিশন। দেশজুড়ে করোনা সংক্রংমণের বাড়বাড়ন্ত। তার জেরেই এই নিষেধাজ্ঞা বলে কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। এছাড়াও বলা হয়েছে, গণনা কেন্দ্রে উপস্থিত থাকতে হলে ২ মে-র আগে আরটি-পিসিআর টেস্ট করাতে হবে এজেন্ট এবং প্রার্থীদের। জয়ী প্রার্থীদের কমিশনের কাছ থেকে শংসাপত্র নেওয়ার ক্ষেত্রেও জারি হয়েছে নিয়ন্ত্রণবিধি। এক্ষেত্রে জয়ী প্রার্থী সহ মাত্র দু'জন গিয়ে কমিশনের আধিকারিকের থেকে সংশাপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
২ মে কেরল, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও পুদুচেরি বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হবে। সেক্ষেত্রে করোনা আবহেও বিজয়ী রাজনৈতিক দলগুলি যে জয়ের উল্লাসে হাজার হাজার সমর্থকদের নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়বে সেই আশঙ্কা ছিল। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার কড়া পদক্ষেপ করল কমিশন।
বাংলায় ৮ দফায় ভোট করাচ্ছে কমিশন। আগামী ২৯ এপ্রিল বাংলায় অষ্টম অর্থাৎ শেষ দফার ভোট। কিন্তু সংক্রমণের হার বিপজ্জনকভাবে ঊর্ধ্বমুখী। ফলে বাধ্য় হয়ে প্রার্থীদের প্রচারে কাটছাঁট করেছে নির্বাচন কমিশন। তারপরও ভোট গণনার দিনই বিজয় মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কড়া পদক্ষেপ করল কমিশন।
করোনা আবহে ভোটের জন্য কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল। সোমবারই করোনাকালে ভোটের প্রচার-সভায় স্বাস্থ্যবিধির 'গা-ছাড়া' মনোভাব নিয়ে কমিশনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। কোভিডে এত মানুষের মৃত্যুর জন্য কার্যত কমিশনকেই দায়ী করেছে আদালত। এমনকি, বিধিনিষেধ মানা নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা দেখাতে না পারলে ২ মে ভোটগণনা আটকে দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
২রা মে গণমার দিন স্বাস্থ্যবিধি কিভাবে বলবৎ করার পরিকল্পনা করেছে কমিশন, তার ব্লুপ্রিন্ট তৈরির জন্য নির্বাচনী নিয়ামক সংস্থাকে সোমবারই নির্দেশ দিয়েছে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। উল্লেখ্য, আগামী রবিবারই পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফলাফল ঘোষণা হবে।
কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। একই মত, বিজেপি, সিপিএম ও কংগ্রেসেরও।
তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেছেন, 'গণনার দিন বিজয় মিছিলে নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। কমিশনের আগেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত ছিল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারংবার সেই আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কমিশন পক্ষপাতিত্ব করে কর্ণপাত করেনি। এখন করেছে। ভালো কথা।'
এপ্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'কমিশনের সব সিদ্ধান্তকেই বিজেপি সবসময় স্বাগত জানিয়েছে, এক্ষেত্রেও তাই জানাচ্ছি।' প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর কথায়, 'কমিশনের আরও আগেই সক্রিয় হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু প্রচার চলাকালীন ওরা কোনও কিছুতেই হস্তক্ষেপ করেনি। এখন আদালত ভর্ৎসনা করতেই কড়া পদক্ষেপ করল। তবে বিঝয় মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারির করে কমিশন ঠিক করেছে।' সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য কমিশনের নিষেধাজ্ঞা সমন্ধে বলেছেন, 'সঠিক সিদ্ধান্ত। প্রচারের সময় কমিশন ভুল করেছিল বা ওদের ভূমিকা ছিল উদ্দেশ্যমূলক। কিন্তু দেরিতে হলেও বোধদয় হয়েছে। কমিশনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত সকলের স্বাগত জানানো উচিত।'
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন