ফিরোজ আহমেদ, ভাঙড়: এ যেন শাহরুখ খানের স্বদেশ সিনেমা। তবে এ খানে শাহরুখ নেই। স্বদেশের এক গ্রাম আছে, যেখানে স্বাধীনতার ৭১ বছর পরেও বিদ্যুতের আলো জ্বলত না। ভুল বলা হল, গ্রাম আছে নয়, গ্রাম ছিল। মঙ্গলবার পর্যন্ত। মঙ্গলবার থেকে সে গাঁয়ে আলো এল।
এ গ্রাম এই বাংলারই। কলকাতা থেকে বেশি দূর নয় সাঁইতলা। ভাঙড়ের এই গ্রামটিতে আলো আসায় বর্ষাকালেই সেখানে এখন অকাল উৎসবের আবহ।
ভাঙড় ১ ও ২ ব্লকের সীমানা ঘেঁষা নারায়ণপুর অঞ্চলের সাঁইতলা গ্রামের প্রায় একশো ঘর স্বাধীনতার পরেও এত দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। এত বছর ধরে এ গ্রামকে দুয়োরানি হয়েই থাকতে হয়েছিল বলে অভিযোগ। ভাঙড়ের এই প্রত্যন্ত গ্রামে বিদ্যুৎ পরিষেবা পৌঁছে দিতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। দীর্ঘ কয়েক কিলোমিটার বিদ্যুতের খুঁটি বসিয়ে তার নিয়ে গিয়ে রাজ্য বিদ্যুত বণ্টন সংস্থা সেখানে ৬৩ কেভির একটি ট্রান্সফর্মার চালু করল। যা থেকে ওই গ্রামের একশো পরিবার বিদ্যুৎ পাবে। মঙ্গলবার এই বিদ্যুৎ পরিষেবার উদ্বোধন করেন জেলা পরিষদ সদস্য কাইজার আহমেদ, পঞ্চায়েত সদস্য জিয়ারুল মোল্লা, অষ্টমী মণ্ডল প্রমুখ। গ্রামের এক কিশোরের কথায়, "পাশের ঘুনিমেঘি গ্রামে লাল্টু বিল্টু দের বাড়িতে এত দিন আলো জ্বলতে দেখতাম। এখন আমাদের বাড়িতেও আলো জ্বলবে। খুব ভাল লাগছে।’’ গ্রামের বাসিন্দা চাঁদমোহন মণ্ডল বলেন, ‘‘এবার থেকে আমাদের ছেলেমেয়েদের আর হ্যারিকেনের আলোয় পড়াশোনা করতে হবে না।’’
বিদ্যুৎ পরিষেবার উদ্বোধন করে জেলা পরিষদ সদস্য কাইজার আহমেদ বলেন, ‘‘সাঁইতলা গ্রামে বিদ্যুতের খুঁটি পুঁতে আলো পৌঁছে দিতে পেরে আমরা খুব খুশি। এই এলাকায় বিদ্যুতের পাশাপাশি রাস্তা,পানীয় জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব ব্যাপারেই উন্নয়নের উপরে জোর দেওয়া হবে।’’