এলগার পরিষদ কাণ্ডে ধৃত পাঁচ সমাজকর্মীর গৃহবন্দিত্বের মেয়াদ আরও দুদিন বাড়ানোর নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। গত মাসে ভীমা কোরেগাঁও হিংসার তদন্তে নেমে ভারভারা রাও, সুধা ভরদ্বাজ, অরুণ ফেরেইরা, ভার্নন গনজালভেজ ও গৌতম নওলাখাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই তদন্তের কেস ডায়েরি এবং সেই দিনের ঘটনার তদন্তে যুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করা হবে, সরকারের তরফে এ কথা বলার পর প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ গৃহবন্দিত্বের মেয়াদবৃদ্ধির রায় দেয়। বেঞ্চ বলেছে, ‘‘প্রতিটি অপরাধের তদন্তই নির্দিষ্ট অভিযোগের উপর ভিত্তি করে করা হয়ে থাকে, আমাদের দেখতে হবে তাতে কোনও সারবস্তু রয়েছে কি না।’’ যদি কোনও বড়সড় গাফিলতি থেকে থাকে, তাহলে বিশেষ তদন্তদলকে দিয়ে এ মামলার তদন্তের যে আবেদন করা হয়েছে, তা বিবেচনা করা যেতে পারে বলে বেঞ্চ জানিয়েছে।
আরও পড়ুন, আমরা টাকা জোগাড় করেছিলাম এলগার পরিষদের সভার, কলকাতায় প্রকাশ্য সভায় বললেন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি
শুনানির সময়ে সরকারের তরফে আবেদনকারীদের সুপ্রিম কোর্টে সরাসরি আবেদন করার বিষয়টি নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। যেভাবে আবেদনকারীরা সরাসরি শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, সে নিয়ে সরকারি আইনজীবী বলেন, ‘‘সমস্ত মামলা সুপ্রিম কোর্টে আসতে পারে না। এটা পদ্ধতি হিসেবে ঠিক নয়। ওঁরা নিম্ন আদালতে যেতে পারতেন, হাইকোর্টে যেতে পারতেন, কিম্বা অন্য কোনও আইনি পদ্ধতিতের আশ্রয় নিতে পারতেন। ওঁদের কেন মনে হল যে নিম্ন আদালতে ওঁদের কথা শোনা হবে না? ওঁরা তো এ কথাও বলেননি যে আদালত তাঁদের আবেদন গ্রাহ্য করেনি।
মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে আদালতে সওয়াল করার সময়ে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, আবেদনকারীরা এ বিষয়ে বহিরাগত এবং ফৌজদারি মামলায় তাঁদের নাক গলাতে দেওয়া উচিত হয়নি। রোমিলা থাপার এবং অন্যান্যদের পক্ষে সওয়ালকারী আইনজীবীরা এর বিরোধিতা করে বলেন যে ‘‘ভুক্তভোগীদের কেউ কেউও এ ব্যাপারে হলফনামা দাখিল করেছেন, এবং এখন এই আবেদন গৃহবন্দিত্বে থাকা ব্যক্তিদের আবেদনের শামিল।’’ এ ব্যাপারে প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র বলেছেন, আদালত এ আবেদন গ্রহণ করেছে স্বাধীনতার ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে। তিনি বলেছেন, ‘‘নিরপেক্ষ তদন্ত ইত্যাদি বিষয় পরবর্তীকালে বিচার্য।’’
আবেদনকারীদের পক্ষে অভিষেক মনু সিংভি জানান তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, কারণ তাঁরা চান আদালতের নজরদারিতে এ মামলার তদন্ত হোক।
গত মাসে সমাজকর্মীদের গ্রেফতারিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার সহ বেশ কয়েকজন।