এলগার পরিষদ অ্যাক্টিভিস্টদের গ্রেফতারিকে ভুল বলে আখ্যা দিলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। পুনে পুলিশের প্রতিশোধপরায়ণ এ কাজের তদন্তে বিশেষ তদন্ত দল তৈরির কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন তিনি । মহারাষ্ট্রে রাজ্য সরকারের অন্যতম শরিক দল এনসিপি।
শরদ পাওয়ার বলেন, "আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলব বিশেষ তদন্ত দল গঠন করতে, যারা পুলিশি ভূমিকার তদন্ত করবে। সমস্ত তথ্য যাচাই হওয়া উচিত।" তিনি আরও বলেন বিশেষ তদন্তদলের মাথায় থাকতে পারেন কোনও বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক অথবা কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতি।
এলগার পরিষদের অ্যাক্টিভিস্টরা তাঁদের ভাষণে অত্যন্ত কড়া মতামত রেখেছেন এ কথা মেনে নিয়ে পাওয়ার বলেন, "গণতন্ত্রে মানুষ এ কাজ করতেই পারে। আমি অতীতে, সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলনের সময়ে এ জিনিস দেখেছিষ কিন্তু সে জন্য তখন কারও বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার অভিযোগ আনা হয়নি... পুরো তদন্ত পর্যায়টিই খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। মনে হচ্ছে পুলিশ তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছিল এবং আমরা বোবা দর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারি না... পুনে পুলিশ কমিশনার এবং তার কয়েকজন সাঙ্গোপাঙ্গের ব্যবহার অত্যন্ত আপত্তিকর।" গ্রেফতারিতে যুক্ত পুলিশ অফিসারদের সাসপেনশনেরও দাবি তুলেছেন শরদ পাওয়ার।
গত বছর ১ জানুয়ারি পুনেতে ভীমা কোরেগাঁও যুদ্ধের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে একজন মারা যান, ও বেশ কয়েকজন আহত হন। তাঁদের মধ্যে ১০ জন পুলিশকর্মীও ছিলেন।
তার ঠিক আগের দিন, ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পুনের শনিবারওয়াড়ায় একটি সভা আয়োজিত হয়। অভিযোগ, সেই সভায় উত্তেজক ভাষণের জেরেই পরদিন ভীমা কোরেগাঁওতে অশান্তি হয়। পুনে পুলিশ ২৩ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে, ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়। যে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ছিলেন সুধীর ধাওয়ালে, রোনা উইলসন, সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, মহেশ রাউত, সোমা সেন, অরুণ ফেরেইরা, ভার্নন গনজালভেজ, সুধা ভরদ্বাজ এবং ভারভারা রাও। চার্জশিটে আরও অভিযোগ করা হয় ধৃতদের মধ্যে একজনের কাছ থেকে পাওয়া এক চিঠিতে নরেন্দ্র মোদীকে "খুনের চক্রান্ত" ফাঁস হয়েছে।
গত বছর জানুয়ারি মাসে ভীমা-কোরেগাঁও সংঘর্ষেরর জেরে পুলিস ১৬২ জনের বিরুদ্ধে ৫৮টি মামলা দায়ের করে। শনিবার পাওয়ার বলেছেন, এলগার পরিষদে কে কী বলেছেন, তার ভিত্তিতে গ্রেফতার করা ঠিক হয়নি।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, লোকসভা ভোটের কয়েক মাস আগেও পাওয়ার একই বক্তব্য রেখেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তাঁর হাতে ক্ষমতা থাকলে তিনি এই গ্রেফতারির জন্য পুনে পুলিশ কমিশনারকে সাসপেন্ড করতেন।
এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে শরদ পাওয়ার বলেন, তাঁর দল নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে এবং সংসদেও এর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। কেন্দ্র ক্ষমতার অপব্যবহার করছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, "সিএএ এবং এনআরসি সমাজজীবনে প্রভাব ফেলতে পারে এবং দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করতে পারে। দেশে সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরুরি বিষয় থেকে নজর ঘোরাতেই এই প্রচেষ্টা" বলে মন্তব্য করেন তিনি।