এলগার পরিষদ মামলায় ইউএপিএ-তে ধৃত মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখার কাছে এনআইএ -র মামলায় জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট। এর আগে দিল্লি হাইকোর্ট ন্যাশনাল ক্যাপিটাল ও মুম্বইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারবিভাগীয় নথি চেয়ে পাঠিয়েছিল। সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা। সেই প্রেক্ষিতেই এ বিষয়ে নওলাখার বক্তব্য জানতে চেয়েছে শীর্ষ আদালত। একই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত দিল্লি হাইকোর্টে এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
এদিন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই মামলার শুনানি হয়। বেঞ্চে ছিলেন বিচারপতি অরুণ মিশ্র, এস এ নাজির এবং ইন্দিরা ব্যানার্জি। বেঞ্চ নওলাখাকে নোটিস জারি করে এবং দু সপ্তাহ পর শুনানির নির্দেশ দেয়। বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়, "নোটিস দিন। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টে মামলা বন্ধ থাকবে। পনের দিন পর তালিকাভুক্ত করুন।"
নওলাখাকে তাঁর অন্তর্বর্তী জামিনের শুনানির তারিখের একদিন আগে গত ২৬ জুন মুম্বইয়ে বদলি করা হয়। তাঁর আবেদনে নওলাখা বলেছিলেন, তাঁর অধিক বয়সের কারণে জেলে কোভিড-১৯ সংক্রমিত হওয়ার ক্ষেত্রে তিনি অধিক ঝুঁকিপ্রবণ, সে কারণে তাঁকে অন্তর্বর্তী জামিন দেওয়া হোক। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার বক্তব্য ছিল, হাইকোর্ট ২৭ মে যে নিম্ন আদালতের কার্যবিবরণী পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে, তা তাদের আওতার বাইরে।
আরও পড়ুন: এলগার পরিষদ মামলা: নওলাখা, টেলটুম্বড়ের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ
এনআইএ তাদের আবেদনে অভিযোগ করে, দিল্লি হাইকোর্ট ভ্রান্তিকরভাবে বারবার অভিযুক্তকে অন্তর্বর্তী জামিন দিয়েছে, যে অভিযুক্ত এমন কর্তৃপক্ষ দ্বারা অভিযুক্ত যা তাদের ভৌগোলিক আওতার বাইরে এবং যিনি মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ বিচারকের আদেশবলে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন (যা দিল্লি হাইকোর্টের আওতার বাইরে)।
এনআইএ হাইকোর্টের ২৭ মে-র নির্দেশ বাতিল করার আবেদন জানায় এবং তারা দাবি করে যে শীর্ষ আদালত নওলাখার শারীরিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি বিবেচনা করে গত ৮ এপ্রিলের নির্দেশে তাঁকে ছাড় দিতে অস্বীকার করেছে।
এ ছাড়াও নওলাখার জামিনের আবেদন হাইকোর্টে হতে পারে কিনা সে নিয়েও প্রশ্ন তোলে সংস্থা, তাদের বক্তব্য, যেহেতু অভিযুক্ত ভারতীয় দণ্ডবিধি ও ইউএপিএ-তে অভিযুক্ত, ফলে জামিনের আবেদন এনআইএ আদালতে হওয়া উচিত।
২৭ মে দিল্লি হাইকোর্ট বলেছিল, এনআইএ যে অস্বাভাবিক তাড়াহুড়ো এই মামলা নিয়ে করছে, তার কোনও কারণ আদালতের চোখে পড়ছে না।
নওলাখা আদালতে বলেন, অন্তর্বর্তী জামিন যে সময়ে বকেয়া, তখন ২৩ মে দিল্লির বিশেষ এনআইএ আদালতে তাঁর বিচারবিভাগীয় হেফাজতের মেয়াদ ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানোর আবেদন করে, এবং ২৪ মে, রবিবার মুম্বইয়ের বিশেষ এনআইএ বিচারকের কাছে ওয়ারেন্ট জারি করার আবেদন জানানো হয়।
নওলাখাকে ২০১৮ সালের অগাস্ট মাসে পুণে পুলিশ তাঁর দিল্লির বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে। তবে দিল্লি হাইকোর্ট তাঁর ট্রানজিট রিম্যান্ডের আবেদন খারিজ করে দেয়।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন