এলগার পরিষদ কাণ্ডে ধৃত পাঁচ সমাজকর্মীর গ্রেফতারির ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না বলে জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চালানোর দাবিও খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। ধৃত পাঁচজন, ভারভারা রাও, ভার্নন গনজালভেজ, অরুণ ফেরেইরা, সুধা ভরদ্বাজ এবং গৌতম নওলাখাকে আরও চার সপ্তাহের জন্য গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ধৃতরা তাঁদের মুক্তির জন্য নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।
গত ২৮ অগাস্ট মহারাষ্ট্র পুলিশ এই পাঁচজনকে গ্রেফতার করার পর থেকে তাঁরা গৃহবন্দি রয়েছেন। ১ জানুয়ারির ভীমা কোরেগাঁও হিংসার তদন্তে নেমে তার আগের দিন পুণেতে আয়োজিত এলগার পরিষদের কর্মসূচিতে মাওবাদী যোগাযোগের সন্ধান পেয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। ধৃতেরা সকলেই ওই কর্মসূচির উদ্যোক্তা এবং মাওবাদীদের সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের দাবি।
আরও পড়ুন, শবরীমালা মন্দিরে সমস্ত মহিলাদের অবাধ প্রবেশাধিকার- সুপ্রিম কোর্ট
সুপ্রিম কোর্টের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ২-১ মতের ভিত্তিতে ধৃতদের মুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছে এবং জানিয়ে দিয়েছে, মতাদর্শের তফাৎ বা ভিন্নমতের জন্য এঁদের গ্রেফতার করা হয়নি।
প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র, বিচারপতি এ এম খানউইলকর এবং বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে নিয়ে গঠিত এই বেঞ্চে বিচারপতি দীপক মিশ্র এবং বিচারপতি এ এম খানউইলকর বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ব্যক্তিদের তদন্তের পদ্ধতি নিয়ে কোনও বক্তব্য থাকতে পারে না, এবং গ্রেফতারির পদ্ধতি নিয়েও তাঁরা প্রশ্ন তুলতে পারেন না।’’ এ ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করে বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, এ ব্যাপারে বিশেষ তদন্তদল গঠন করে আদালতের নজরদারিতে তদন্ত চালানো উচিত। বিচার চলাকালীন পুনে পুলিশ যেভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে, তারও নিন্দা করেন তিনি। গ্রেফতারির বিষয়ে পুনে পুলিশের ভূমিকার নিন্দা করেন তিনি।
পাঁচ অ্যাক্টিভিস্টের প্রাথমিক গ্রেফতারির সময়ে পুনে পুলিশ জানিয়েছিল ‘নিষিদ্ধ সংগঠনের বৃহত্তর ষড়যন্ত্র’ এলগার পরিষদ ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে আছে।
এদিকে ধৃত ভার্নন গনজালভেজের স্ত্রী জানিয়েছেন, তারা শীঘ্রই নিম্ন আদালতের দ্বারস্থ হবেন।
We welcome this order that SC found merits in our intervention. We've been given 4 weeks protection to approach lower courts. So, obviously we will be reaching lower court shortly: Advocate Susan Abraham (wife of activist Varnan Gonsalves) to ANI on SC's verdict. #BhimaKoregaon pic.twitter.com/W6f8vsYJkP
— ANI (@ANI) September 28, 2018
মহারাষ্ট্র পুলিশের বক্তব্য ছিল, ৬ মাওবাদী কর্মীর গ্রেফতারিরর পর তাদের কাছ থেকে পাওয়া বেশ কিছু জিনিসপত্র থেকে সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় তথ্য মিলেছে।
আবেদনকারীদের বক্তব্য ছিল অভিযুক্তদের ‘কঠোর মতানৈক্যের’ কারণে ‘এলোপাথাড়িভাবে’ গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন ঐতিহাসিক রোমিলা থাপার, অর্থনীতিবিদ প্রভাত পট্টনায়ক এবং দেবকী জৈন, সমাজতত্ত্বের অধ্যাপক সতীশ দেশপাণ্ডে এবং মানবাধিকার বিষয়ক আইনজীবী মাজা দারুওয়ালা। তাঁদের আবেদন ছিলি ধৃতদের এখনই মুক্তি দেওয়া হোক এবং এই গ্রেফতারির ব্যাপারে নিরপেক্ষ তদন্ত করা হোক।