জম্মু কাশ্মীরের পুঞ্চ ও রাজৌরির এনকাউন্টার সপ্তম দিনে পড়ল। জঙ্গি দমন অভিযান পুরোদমে জারি রেখেছে সেনা। পাকিস্তান সীমান্তবর্তী জেলার মেনধর-দেহরা গালি-থানামান্দি এবং ভিম্বার গালির মধ্যে ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে জঙ্গিরা। ঘন জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা ৬-৮ জঙ্গির কাছে বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র মজুত বলে সন্দেহ সেনাবাহিনীর। এরই মধ্যে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করেছে জম্মু কাশ্মীর পুলিশ। রবিবার পুঞ্চের ভট্টা দুরিয়ান থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক মহিলা ও তার ছেলে-সহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। আটক তিনজন পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর থেকে ঢোকা ওই জঙ্গিদের নানাভাবে সাহায্য করেছিল বলে সন্দেহ পুলিশের। আপাতত তিনজনকেই দফায়-দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
জম্মু কাশ্মীর পুলিশের অনুমান, দেড় থেকে দু’মাস আগে পাক অধিকৃত কাশ্মীর পেরিয়ে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢোকে জঙ্গিরা। সঙ্গে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে ভারতে ঢোকে পাক জঙ্গিরা। ভারতে তাদের স্থানীয় বেশ কয়েকজন সাহায্য করে বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। রবিবার জঙ্গিদের সাহায্য করার অভিযোগে জারিনা আখতার ও তার বছর উনিশের ছেলে সাফতকে আটক করেছে পুলিশ। তবে পুঞ্চ ও রাজৌরির স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জঙ্গিরা এর আগে বিশেষভাবে সাহায্য পায়নি। কারণ এ চত্বরের অধিকাংশ মুসলিমই জম্মু অঞ্চলের। এছাড়াও গুজ্জর এবং বাকরওয়াল সম্প্রদায়ের মানুষও বাস করেন এই এলাকায়। ১৯৪৭ সাল পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে বিতাড়নের পর বহু হিন্দু পরিবারও এই এলাকায় এসে বাস করছেন।
জম্মু কাশ্মীর পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, এলাকার পরিস্থিতি যাই হোক, কোনও একজন ব্যক্তি বা পরিবার জঙ্গিদের রসদ জুগিয়ে সাহায্য করতেই পারে। এই এলাকার ক্ষেত্রে এটা বিরল ঘটনা হলেও তা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তবে রবিবার আটক ব্যক্তিরা জঙ্গিদের স্বেচ্ছায় সাহায্য করেছিলেন নাকি তাঁদের সাহায্য করতে বাধ্য করা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন পুলিশ আধিকারিকরা। শনিবার রাত পর্যন্ত নিরাপত্তাবাহিনীকে মুহুর্মুহু লড়াইয়ে ব্যস্ত রেখেছিল জঙ্গিরা। জঙ্গিদের মধ্যে থাকা ৬-৮ জনের কাছে বিপুল পরিমাণ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র মজুত ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। শনিবার রাতের পর রবিবারও ঘণ্টাখানেক ধরে জঙ্গি-সেনা গুলির লড়াই জারি ছিল।
আরও পড়ুন- দুর্যোগ কমার লক্ষ্মণই নেই, আজও ঝেঁপে বৃষ্টি জেলায়-জেলায়
পাকিস্তান সীমন্তবর্তী এই এলাকায় ঘন জঙ্গল থাকার সুযোগ নিচ্ছে জঙ্গিরা। ঘন জঙ্গলে প্রতি মুহূর্তে এলাকা বদল করে হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। তবে জঙ্গিদের যোগ্য জবাব দিচ্ছে সেনা। লুকিয়ে থাকা জঙ্গিদের খুঁজে বের করতে ড্রোন, চপারের সাহায্য নিচ্ছে সেনাবাহিনী। জঙ্গি দমন অভিযানে যোগ দিয়েছেন প্যারা কমান্ডোরাও। সেনাবাহিনী সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, ভট্টা দুরিয়ানে বর্তমান যে এলাকায় অপারেশন চলছে সেখানে এক বর্গ কিলোমিটারেরও কম ঘন পাইন বন রয়েছে। এলাকাটি নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে কমপক্ষে ১০ কিলোমিটার ভিতরে।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন