ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন 'ভয়ঙ্কর ও বিভেদ সৃষ্টিকারী'। সিএএ বৃহত্তম রাষ্ট্রহীনতার সঙ্কট তৈরি করতে পারে।
এই দাবি করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে প্রস্তাব পেশ হয়েছে। ২৪টি দেশের দক্ষিণপন্থী ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টি ও সোশ্যাল অ্যান্ড ডেমোক্র্যাট সহ পাঁচটি গ্রুপের সদস্যরা এই প্রস্তাব পেশ করেছে। আগামী ২৯ জানুয়ারি প্রস্তাবনার উপর আলোচনা হবে। এছাড়াও সিএএ-এর পক্ষেও আরেকটি প্রস্তাবনা পেশ হয়েছে। এক্ষেত্রে আলোচনা হবে ৩০ জানুয়ারি।
Advertisment
সিএএ-এর মাধ্যেমে বাদ দেওয়া হয়েছে মুসলিমদের। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে এই সিএএ নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। ৭৫১ সদস্য বিশিষ্ট ইইউ পার্লামেন্টে দক্ষিণপন্থী ইউরোপিয়ান পিপলস পার্টির সদস্য সংখ্য়া ১৮২ জন। মূলত তারাই সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পেশ করেছে। প্রস্তাব সমর্থন করেছে দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী সোশ্যালিস্ট অ্যান্ড ডেমোক্রাট গ্রুপও। পার্লামেন্টে এদের সদস্য সংখ্যা ১৫৪ জন।
ভারতের বিভিন্ন অংশে সিএএ বিরোধী আন্দোলন দমনের পদ্ধতি নিয়ে নিন্দা করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যরা। চলতি বছরের মার্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ব্রাসেলসে যাওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হবে তাঁর। তার ঠিক দু'মাস আগে ইইউ পার্লামেন্টেসিএএ বিরোধী প্রস্তাব পেশ মোদী সরকারের অস্বস্তি বাড়াল বলেই মনে করা হচ্ছে।
Advertisment
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পার্লামেন্টে সিএএ বিরোধী প্রস্তাব পেশ নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া দেয়নি ভারত। তবে সূত্র মারফত ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানতে পেরেছে, নয়া দিল্লি তার আগের অবস্থানেই অনড় থাকছে। অর্থাৎ সিএএ ভারতের 'অভ্যন্তরীণ বিষয়' বলেই জানানো হবে। প্রস্তাব পেশ ও সমর্থন যারা করছেন তারা সব বিষয় খুঁটিনাটি জানতে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন বলে আশা প্রকাশ করছে নয়া দিল্লি। ভারতের তরফে আশা করা হচ্ছে, গণতান্ত্রিক পথে নির্বাচিত সরকারের তৈরি আইনের বিরুদ্ধে ইইউ পার্লামেন্ট এমন কোনও পদক্ষেপ করবে না যাতে প্রশ্ন ওঠে।
৫ জানুয়ারি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ে মুখোশধারী দুষ্কৃতীদের হামলা হয়। সিএএ বিরোধী আন্দোলন দমনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন বিরোধী প্রস্তাবে সেই বিষয়গুলিকেও সংযুক্ত হয়েছে। আইনটিকে 'বৈষম্যমূলক' আখ্যা দিয়ে বিভাজনের কারণ হিসাবে তুলে ধরা হয়েছে।
ইইউ পার্লামেন্টে ওঠা সিএএ বিরোধী প্রস্তাবের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে প্রস্তুত ভারত। 'নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, সংসদে বিতর্কের মধ্যে দিয়ে নাগরিকত্ব আইন পাস হয়েছে। বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিটি সমাজের পৃথক মানদণ্ড রয়েছে। তাই সিএএ-কে বৈষম্যমূলক বলা যায় না। এমনকী ইউরোপীয় বিভিন্ন সমাজেও একই ধারা প্রচোলিত।' এমনটাই মনে করছে নয়া দিল্লি। সূত্র মারফৎ যা জানা গিয়েছে।