দিন একদিন একদিন করে এগোচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সোমবার পড়ল ১২ দিনে। ইউক্রেনের সুমিতে আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের উদ্ধার এখনও অধরা। কথা ছিল, সুমি স্টেট ইউনিভার্সিটির পড়ুয়াদের সোমবারই উদ্ধার করা হবে। সেইমতো, যাবতীয় ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। পড়ুয়ারা স্বস্তি পেয়েছিলেন, গোলাবারুদের দৈনিক আছড়ে পড়ার শব্দ আর শুনতে হবে না। এই অসহ্য পরিবেশ থেকে অবশেষে মুক্তি মিলবে।
কিন্তু, সেটা হল না। গত ১১ দিন জীবন-মরণের যে মাদারি খেলা সঙ্গী করে হস্টেলের বাংকারে পড়ুয়ারা মুখ গুঁজে পড়েছিলেন, সেই অসহনীয় পরিবেশ আরও একদিন তাঁদের সহ্য করতে হবে। সেকথা সোমবারই তাঁরা জানতে পারলেন ভারতীয় দূতাবাসের থেকে। সুমি থেকে পড়ুয়াদের বের করে আনতে দূতাবাসের হয়ে দায়িত্ব নিয়েছেন রেনিস জোসেফ। তিনিই সোমবার পড়ুয়াদের জানান, নিরাপত্তার কারণে আরও একদিন তাঁদের সুমি-তে কাটাতে হবে।
এর আগে ইউক্রেনের ভারতীয় দূতাবাস টুইট করে জানিয়েছিল, পশ্চিম সীমান্তের পোলতভা দিয়ে সুমি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ইউক্রেন থেকে বের করা হবে। পড়ুয়ারা তৈরি থাকুন। অল্প সময়ের নোটিসেই তাঁদের সুমি ছাড়তে হবে। ভারতীয় দূতাবাসের প্রতিনিধিরা ইতিমধ্যেই পোলতভায় পৌঁছে গিয়েছেন বলেও জানিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে সুমি-র পড়ুয়াদের যাতে নিরাপদে ইউক্রেন থেকে বের করে আনা যায়, সেই ব্যাপারেও জেলেনস্কির সাহায্য চেয়েছিলেন মোদী।
তা হলে, সোমবার কী এমন হয়ে গেল যে রেনিস জোসেফকে পড়ুয়াদের নতুন কথা জানাতে হল? এই ব্যাপারে জোসেফ সাফ জানিয়েছেন, তিনি বিদেশ মন্ত্রকের নির্দেশেই যা করার করেছেন। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক তাঁকে জানিয়েছে, সোমবার পড়ুয়াদের নিরাপদে ইউক্রেন থেকে বের করা সম্ভব নয়। তিনি সেকথা জানামাত্রই পড়ুয়াদের তা জানিয়েও দিয়েছেন। একইসঙ্গে, মঙ্গলবার ওই পড়ুয়াদের নিরাপদে ইউক্রেন থেকে সরানো যাবে বলেই আশা প্রকাশ করেন জোসেফ।
জোসেফ যে খুব একটা ভুল কিছু বলেননি, তা অবশ্য সোমবার বেলা গড়াতেই পড়ুয়ারা নিজেরাও বুঝতে পারছেন। বাংকার থেকেই তাঁরা শুনতে পাচ্ছেন, অন্যদিনের মতোই তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আছড়ে পড়ছে ক্ষেপণাস্ত্র, গোলা। শুনতে পাচ্ছেন গুলি ছোড়া আর পালটা গুলির শব্দও।
Read story in English