অহিন্দুদেরও তপশিলি জাতির মর্যাদা দেওয়ার ব্যাপারে একধাপ এগোল কেন্দ্র। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি কেজি বালাকৃষ্ণনকে তিন সদস্যের কমিশনের প্রধান নিয়োগ করা হয়েছে। যাঁরা ঐতিহ্যগতভাবে তপশিলি জাতিভুক্ত, এমন ব্যক্তিদের তপশিলি জাতির মর্যাদা দানের বিষয়টি কমিশন খতিয়ে দেখবে।
ওই ব্যক্তিরা যদি বৌদ্ধ বা শিখ সম্প্রদায়েও ধর্মান্তরিত হন, তবেও তাঁরা তপশিলি জাতির মর্যাদা পাবেন। সামাজিক ন্যায় এবং ক্ষমতায়ন মন্ত্রক এনিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। তিন সদস্যের কমিশনের বাকি সদস্যরা হলেন অবসরপ্রাপ্ত আইএএস আধিকারিক রবিন্দরকুমার জৈন ও ইউজিসির সদস্য তথা অধ্যাপক সুষমা যাদব। দু'বছরের মধ্যে কমিশন তার রিপোর্ট মন্ত্রকের কাছে জমা দেবে।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর, দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সর্বপ্রথম প্রতিবেদনে জানিয়েছিল যে সরকার একটি জাতীয় কমিশন গড়তে চলেছে। সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শিক্ষাক্ষেত্রে যাঁরা পিছিয়ে আছেন এবং তপশিলি জাতির মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য, তাঁদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে গঠন করা হচ্ছে এই কমিশন। এই সব ব্যক্তিদের অনেকেই ইসলাম বা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করেছেন। তাঁদেরও তপশিলি জাতির মর্যাদা দিতে চায় সরকার। সেই জন্যই কমিশন গঠন করা হয়েছে।
ভারতীয় সংবিধানের তপশিলি আইন, ১৯৫০-এ পরিষ্কার বলা আছে যে হিন্দু, শিখ ও বৌদ্ধ বাদে কাউকে তপশিলি জাতির মর্যাদা দেওয়া যাবে না। প্রথমে শুধু হিন্দুদের এর আওতায় রাখা হয়েছিল। পরে শিখ ও বৌদ্ধদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। নতুন কমিশন এমন একসময়ে গঠন করা হয়েছে, যখন সুপ্রিম কোর্ট ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ দলিত খ্রিস্টান (এনসিডিসি)-দের দায়ের করা একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি করছে।
আরও পড়ুন- লক্ষ্মীপুজোর আয়োজনে দম ছুটেছে আম-আদমির, অগ্নিমূল্য বাজারের পকেটে ছ্যাঁকা!
এই ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ দলিত খ্রিস্টানরা ২০২০ সাল থেকে থেকে তপশিলি জাতির মর্যাদার জন্য লড়াই করছে। ২০০৪ সাল থেকে এই ব্যাপারে বহু মামলা সুপ্রিম কোর্টে জমা আছে। সেই সব মামলার ব্যাপারে আগস্ট মাসে সুপ্রিম কোর্ট কেন্দ্রকে তার অবস্থান জানানোর নির্দেশ দিয়েছে। দলিত খ্রিস্টান এবং মুসলিম সংগঠনগুলোর বক্তব্য যে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। বৃহস্পতিবার, এই সংগঠনগুলো কেন্দ্রের নতুন পদক্ষেপকে 'দেরি করার কায়দা' বলে অভিযোগ করেছেন।
যাই হোক, সরকারের গঠিত নতুন কমিশন বর্তমান তপশিলি জাতির ওপর গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের প্রভাব এবং প্রথা, ঐতিহ্য, সামাজিক এবং অন্যান্য বৈষম্য ও বঞ্চনার জন্য ধর্মান্তরিতরা কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তা-ও খতিয়ে দেখবে। এই ব্যাপারে সামাজিক ন্যায় মন্ত্রক জানিয়েছে যে, 'কিছু গোষ্ঠী' অনুমোদিত ব্যক্তিদের বাইরে অন্য ধর্মাবলম্বীদের রাষ্ট্রপতির আদেশের মাধ্যমে তপশিলির মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
Read full story in English