সময়টা ছিল ১৯৯৩ সাল। এক প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন যশবন্ত সিনহা। সেই সময়, তাঁর যোগদানে উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠেছিল বিজেপি। দলের প্রবীণ নেতা লালকৃষ্ণ আদবানি সেই সময় যশবন্ত সিনহার বিজেপিতে যোগদানকে দলের জন্য 'দীপাবলি উপহার' বলে বর্ণনা করেছিলেন। প্রাক্তন আমলাকে এরপর প্রায়ই বিজেপির কর্মসূচিতে দেখা গিয়েছে। সেই সুবাদে তাঁর রাজনৈতিক কেরিয়ারেরও ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে।
লালকৃষ্ণ আদবানির ছত্রছায়ায় থেকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে ক্রমশই পরিচিত হয়ে ওঠেন যশবন্ত সিনহা। ১৯৯৯ থেকে ২০০৪ সাল, অটলবিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন প্রথম এনডিএ সরকারের অর্থ ও বিদেশমন্ত্রী হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। মোদী জমানায় আদবানি কোণঠাসা হয়ে পড়তেই যশবন্ত সিনহা বিজেপি ছাড়েন। এরপর তৃণমূলে যোগদান।
ফের নতুন আকার নিতে চলেছে তাঁর রাজনৈতিক প্রোফাইল। কারণ, সেই যশবন্ত সিনহা এখন রাষ্ট্রপতি পদে ১৮টি বিরোধী দলের সর্বসম্মত প্রার্থী। আদতে তিনি ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা।
১৯৮৪ সালে আইএএস থেকে পদত্যাগের পর রাজনীতিতে যশবন্ত সিনহার প্রথম পদক্ষেপ ছিল জনতা দল। সেই দল থেকেই তিনি ১৯৮৮ সালে রাজ্যসভার সদস্য হন। বিজেপির সর্বভারতীয়স্তরে গৌরবময় দিন কাটানোর পর, ২০০৫ সাল থেকে ধাক্কা খেতে শুরু করে তাঁর রাজনৈতিক পথচলা। সেই সময় পাকিস্তান সফরে মহম্মদ আলি জিন্নাহর প্রশংসা করেছিলেন আদবানি।
তাতে দলের অভ্যন্তরেই চাপ বাড়তে থাকে আদবানির ওপর। সেই সময় বারবার আদবানির পাশে থেকেছেন যশবন্ত। কিন্তু, দীর্ঘ ১০ বছর বিরোধী দলনেতা থাকা আদবানি নিজেই ক্ষমতা দখলে ক্রমশ অক্ষম হয়ে পড়েন। মোদীর সঙ্গে টক্করে হেরে যান। তাতে আরও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েন যশবন্তও।
আরও পড়ুন- শিল্পে বিনিয়োগের জন্যও উন্নত বিচার ব্যবস্থা জরুরি, জানালেন প্রধান বিচারপতি
প্রবল মোদী-বিরোধী বলে পরিচিত যশবন্ত সিনহাকে বিরোধীরা প্রার্থী করায়, তা খোলা মনে মেনে নিতে পারেনি বিজেপি। তার আগে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে কার্যত বিরোধী নেত্রী হয়ে ওঠে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে মঙ্গলবার বিজেপির গ্রাত্রদাহ আরও বাড়িয়েছেন যশবন্ত।
তিনি তৃণমূল কংগ্রেস থেকে পদত্যাগের ঘোষণা করে টুইট করেন, 'তৃণমূল কংগ্রেসে তিনি আমাকে যে সম্মান ও প্রতিপত্তি দিয়েছেন, তার জন্য আমি মমতাজির কাছে কৃতজ্ঞ। এখন একটা সময় এসেছে যখন বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে আমাকে দলীয় রাজনীতি থেকে সরে এসে বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের জন্য কাজ করতে হবে। আমি নিশ্চিত যে তিনি আমার এই পদক্ষেপকে অনুমোদন করেছেন।'
Read full story in English