নোয়াপাড়ার দাদাভাই সংঘের পুজো মন্ডপের দ্বারোদঘাটন করলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সাংসদ সৌগত রায়, উত্তর ২৪ পরগণার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ, এবং বিধানসভার উপমুখ্য সচেতক তাপস রায়। এদিন দুপুর গড়াতেই বরানগরের টবিন রোড থেকে নোয়াপাড়া মেট্রো স্টেশন চত্বর পর্যন্ত মোতায়েন করা হয়েছিল পুলিশ বাহিনী।
কয়েকদিন ধরেই শহরের বিভিন্ন এলাকা ছেয়ে গিয়েছিল পোস্টারে। পঞ্চমীর দিন দাদাভাই সংঘের দুর্গাপুজা মন্ডপ উদ্বোধনে আসছেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। যা দেখে শহরবাসীর অনেকের মনেই প্রশ্ন জেগেছিল, শহরতলির দাদাভাই সংঘ আবার কোথায়? এতদিন দক্ষিণ কলকাতার চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সংঘ, বা ত্রিধারা সম্মিলনীর মত ক্লাবগুলি এরকম বাঘা বাঘা কিছু নাম এনে উদ্বোধনে হাজির করত। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় তাদেরকে ছাপিয়ে গেল শহরতলির টবিন রোড এলাকা সংলগ্ন দাদাভাই সংঘ।
আরও পড়ুন: চালচিত্রের চলচ্চিত্র; হারিয়ে যাচ্ছে সাবেকিয়ানা
সন্ধে গড়াতেই লালবাতির সারি সারি গাড়ি সাইরেন বাজিয়ে ঢুকে পড়ল নোয়াপাড়ার মেট্রো স্টেশন যাওয়ার গলিতে। একবার প্রণববাবুকে দেখার ইচ্ছে নিয়ে হাজার হাজার লোক জড়ো হয়েছিলেন গোটা এলাকায়। স্টেজে দাঁড়িয়ে প্রণববাবু জানান, তাঁর কাছে দুর্গাপুজো মানেই তাঁর পৈত্রিক ভিটে কীর্ণাহারের পুজো। প্রতি বছর পুজোর চারটে দিন পরিবার সঙ্গেই কাটাতে পছন্দ করেন তিনি। নিজের বাড়ির পুজোর পৌরহিত্য করা প্রণববাবুর বাৎসরিক রুটিন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় থাকাকালীন ব্যস্ততার মাঝেও এই অভ্যাসের অন্যথা ঘটে নি। এবারও শহর ছেড়ে চলে যাবেন বীরভূমের মিরাটিতে, যেখানে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছেন পরিবারের সদস্যরা। এদিন তিনি জানান, বর্তমানে তাঁর বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ তিনি।
সবার মনেই প্রশ্ন ছিল, হঠাৎ দাদাভাই সংঘ কীভাবে নাগাল পেলো প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির? এদিন সে প্রশ্নের উত্তর দিলেন তিনি স্বয়ং। তাঁর "হাফ প্যান্ট সময়কালের বন্ধু" এবং তৎকালীন প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যাপক "অমলের পাড়ার পুজো" দাদাভাই সংঘ। বন্ধুর আবদার রাখতেই আজ শহরে পা রেখেছেন তিনি। বন্ধুর আবদার ছিল এক কাপ কফি খাওয়ার, সঙ্গে পুজো মন্ডপের দ্বারোদঘাটন।
এই সুযোগটাই নিয়েছেন বরানগর পুরসভার তৃণমূল কংগ্রেসের লড়াকু কাউন্সিলর অঞ্জন পাল। বরানগর দাদাভাই সঙ্ঘের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিকে রাজি করিয়ে বাজিমাত করেছেন অঞ্জনবাবু।
দাদাভাই সংঘের এবছরের পুজোর থিম 'শরতেও বসন্ত'। সৌজন্যে শিল্পী প্রশান্ত পাল। এবছরের বাজেট ত্রিশ লাখ ছুঁই ছুঁই। মণ্ডপের দর্শনার্থীরা জলাশয়ের উপর সুসজ্জিত ও নবনির্মিত সেতুটি দেখলে আকর্ষিত হবেন, বলা বাহুল্য।