পুলওয়ামা-কাণ্ডের ১২ দিন পরে আকাশপথে পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে প্রত্যাঘাত করেছে ভারত। ভারতীয় বায়ুসেনার ১২ টি 'মিরাজ ২০০০' যুদ্ধবিমান ভোররাতের সার্জিকাল স্ট্রাইকে আঘাত হেনেছে বালাকোট সেক্টরে পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটির উপর।
আকাশপথে এই হানার হাতিয়ার 'মিরাজ ২০০০' ঠিক কী? আসুন, দেখে নেওয়া যাক ঝলকে।
১৯৮৫-তে ভারতীয় বায়ুসেনার অস্ত্রভাণ্ডারে যুক্ত হয় মিরাজ-২০০০, যা নিঃসন্দেহে আকাশপথে ভারতের সবচেয়ে শক্তিশালী এবং ধ্বংসাত্মক হাতিয়ার। মিরাজ যুদ্ধবিমানের নির্মাতা ফ্রান্সের 'ডাসল্ট এভিয়েশন' সংস্থা। ফ্রান্সের বিমানবাহিনীতে মিরাজ যুক্ত হয় ১৯৮৪ সালে। পাকিস্তান আটের দশকের শুরুতে আমেরিকার থেকে এফ-১৬ 'ফাইটার জেট' কেনার পর আকাশপথে নিজেদের সমরসজ্জা আরও দুর্ভেদ্য করতে ৪০ টি (৩৬ টি 'সিঙ্গল-সিটার' এবং চারটি 'টুইন সিটার') মিরাজ যুদ্ধবিমান কেনার সিদ্ধান্ত নেয় ভারত।
আরও পড়ুন: ১৯৭১ এর পর এই প্রথম পাকিস্তানের আকাশে ভারতীয় বায়ুসেনা
১৯৯৯-এর কার্গিল যুদ্ধে ভারতের সাফল্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিল এই মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমান। ২০০৪ সালে আরও দশটি মিরাজ যুদ্ধবিমান কেনে ভারত, সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় পঞ্চাশে। ২০১১-য় যুদ্ধবিমানগুলি আরও উন্নততর করে মিরাজ ২০০০ থেকে মিরাজ ২০০০-৫ K ক্যাটেগরিতে রূপান্তরিত করা হয়।
মিরাজ বিমান ব্যবহার করে খুবই হাল্কা 'সিঙ্গল শ্যাফ্ট ইঞ্জিন'। এই ইঞ্জিনের নাম SNECMA M 53। সাধারণত একজন ফাইটার পাইলটই বসতে পারেন মিরাজে, তবে প্রয়োজনমতো দু'জনের বসার ব্যবস্থাও আছে। মিরাজের দৈর্ঘ্য মাত্র ১৪.৩৬ মিটার, ওজন ৭,০০০ কেজি। টেকঅফ-এর সময় বহনক্ষমতা ১৭,০০০ কেজি। মিরাজের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ২,৩৩৬ কিমি। উড়ানের সর্বোচ্চ উচ্চতা ভূমিপৃষ্ঠ থেকে ৫৯,০০০ ফুট। আকাশপথে মিরাজে সওয়ার হতে পারে লেসার-নির্দেশিত বম্ব এবং বিবিধ অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র।
ভারত ছাড়াও ফ্রান্স, ইজিপ্ট, পেরু, তাইওয়ান, গ্রীস এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির অস্ত্রভাণ্ডারে রয়েছে মিরাজ যুদ্ধবিমান। মিরাজের উত্তরসূরী হিসাবে ডাসল্ট তৈরি করেছে রাফাল যুদ্ধবিমান। যে বিমান কেনার বরাত দিয়েছে ভারত এবং কেনাবেচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক কিছুদিন ধরেই চলছে দেশজুড়ে।