রবিবার পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৪০ জন নিহত এবং ১৩০ জনের বেশি আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে বাজাউরের প্রাক্তন উপজাতি এলাকায় রক্ষণশীল জমিয়ত উলেমা ইসলাম-ফজল (জেইউআই-এফ) পার্টির এক সমাবেশে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে। তবে, বিস্ফোরণের কারণ সম্পর্কে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
জেলা পুলিশ অফিসার নাজির খান রয়টার্সকে বলেছেন, 'জেইউআই-এফ বাজাউরের খার শহরে এক কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করেছিল। যাতে ৪০ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৩০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন।' নাজির খান জানিয়েছেন, বাজাউর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার হাসপাতালে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে বেশিরভাগ আহতদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং ইসলামাবাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে কট্টর ইসলামপন্থী জঙ্গিদের হামলার প্রবণতা বেড়েছে।
তবে, সাম্প্রতিক হামলার বেশিরভাগই রাজনৈতিক সমাবেশের পরিবর্তে নিরাপত্তা বাহিনী এবং প্রতিষ্ঠানকেই লক্ষ্য হিসেবে বেছে নিয়েছিল। তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), দেশের পশ্চিমে প্রতিবেশী আফগানিস্তানের শাসক জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের প্রতি অনুগত। যদিও তারা সরাসরি আফগানিস্তানের তালেবান জঙ্গিগোষ্ঠীর অংশ নয়। পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযোগ, আফগানিস্তান
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) সংগঠনের জঙ্গিদের নিরাপদ আশ্রয়। তবে, তালেবান পরিচালিত আফগানিস্তান প্রশাসন একথা মানতে নারাজ। আফগানিস্তান প্রশাসনের তরফে তাদের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ এক বিবৃতিতে রবিবারের বিস্ফোরণের নিন্দা করেছে। টিটিপিই কিন্তু আফগানিস্তানের একমাত্র জঙ্গি গোষ্ঠী নয়। আফগানিস্তানের বিভিন্ন অঞ্চলে বারবার হামলা চালানোর অভিযোগ জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধেও উঠেছে।
আরও পড়ুন- জন্মদিনে অওধের শেষ নবাবকে ফিরে দেখা
পাকিস্তানে অবশ্য জঙ্গি হামলা নতুন কিছু নয়। দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবেশী দেশটির ধর্মীয় স্থানগুলো রক্তাক্ত হয়েছে। যার পিছনে অভিযোগের আঙুল উঠেছে সুন্নি প্রভাবিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের দিকে। তার প্রেক্ষিতে ওই জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালিয়েছে পাকিস্তান সরকার। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত খাইবার পাখতুনখোয়া অঞ্চলের জঙ্গিদের পুরোপুরি দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে ইসলামবাদ।