ফাঁদ পাতা হয়েছিল চমৎকার। তবে শেষ রক্ষা হল না। অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি আধিকারিককে প্রতারণার দায়ে ৪ জনকে বেঙ্গালুরু থেকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এদের মধ্যে তিনজন ভিনদেশের নাগরিক। বেঙ্গালুরু থেকে গায়ানার স্টিভ গোমস (৩৩), নাইজেরিয়ার কাচি আগুগুয়া (২৯), পশ্চিম আফ্রিকার এক দেশের জনসন উহুনোমুর (৩৪) ছাডাও গ্রেফতার করা হয়েছে সঞ্চিতা দে (৩০)-কে। ধৃতদের সকলকেই ট্রানজিট রিম্যান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে।
৬২ বছরের ভাস্কর ঘোষ পুলিশের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। কী হয়েছিল তাঁর সঙ্গে? প্রায় চমকে দেওয়ার মতোই সে কাহিনি। গত ৬ এপ্রিল ফেসবুকে অ্যানি এলিজাবেথ নামের এক মহিলার ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করেন ভাস্করবাবু। নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে এলিজাবেথ জানায় সে আমেরিকান সেনাবাহিনীর একজন জেনারেল। ভাস্করবাবুকে একটি ব্যবসার প্রস্তাব দেয় সে। তাঁকে বলা হয়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জীবনদায়ী ওষুধ বানানোর জন্য কিছু ভেষজ বীজ সরবরাহ করতে। এ কাজের জন্য ভাস্কর ঘোষের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় বিনীতা শর্মা নামের এক ‘বীজ সরবরাহকারী’র।
বিনীতার কাছ থেকে বীজ কেনেন ভাস্কর ঘোষ। বীজের নমুনা নিয়ে তিনি বেঙ্গালুরুতে যান ‘মার্কিন ওষুধ কোম্পানির এক প্রতিনিধি’র সঙ্গে দেখা করতে। সে প্রতিনিধি নমুনা দেখে পছন্দ করেন, এবং তার দাম হিসেবে ১০০ ডলার দেন। একই সঙ্গে ১০০ প্যাকেট বীজের অর্ডারও দেন ওই ‘প্রতিনিধি’। এরপর কলকাতায় ফিরে বিনীতা শর্মার কাছ থেকে বীজ কেনেন ভাস্কর ঘোষ, এবং বিনীতার অ্যাকাউন্টে সে বাবদে ১৮ লক্ষ টাকা ট্রানসফার করেন তিনি। তাঁকে বলা হয়, বীজ তাঁর বাড়ি থেকে সংগ্রহ করা হবে এবং দাম মিটিয়ে দেওয়া হবে।
এর পর বেপাত্তা হয়ে যায় গোটা ওষুধ কোম্পানি। ভাস্করবাবু বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অভিযোগ করেন বিধাননগর থানায়। এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। খোঁজ মেলে এই প্রতারণা চক্রের। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ধৃত সঞ্চিতা দে-ই এলিজাবেথ ও বিনীতা শর্মা। ভাস্কর ঘোষের সঙ্গে প্রতারণা করার উদ্দেশ্যেই বিভিন্ন প্রোফাইল বানিয়েছিল সে।