অনলাইন পোস্টের মাধ্যমে তাঁকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগেই রবিবার রাতে দিল্লি পুলিশের সাইবার সেলে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন ফেসবুক ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাস। তাঁর অভিযোগ, 'একাধিক ব্যক্তি অনলাইনে এমন সব পোস্ট বা কনটেন্ট পাবলিশ করছেন যা খুবই হিংসাত্মক। এগুলি আমার জীবনের প্রতি হুমকি।' অভিযোগ দায়ের হলেও এখনও এফআইআর হয়নি। দিল্লি পুলিশের এক আধিকারীক জানিয়েছেন, 'অভিযোগ পেয়েছি, ঘঠনার তদন্ত চলছে।'
বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগে বাধা দিয়েছিলেন এ দেশে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাস। বাণিজ্যিক কারণ বিবেচনা করেই এই বাধা দেওয়া হয়েছে। গত ১৪ অগাস্ট মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অনলাইন পোস্টের বিষয়বস্তু এই প্রতিবেদনের ভিত্তিতে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন আঁখি।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদন দাবি করা হয়, ভারতে বাণিজ্যিক ধাক্কার ‘আশঙ্কা’-য় বিজেপি নেতা-নেত্রীদের বিদ্বেষ ও উস্কানিমূলক পোস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষ রোধ আইন’ প্রয়োগে বাধা দিয়েছিলেন এ দেশে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ আঁখি দাস। প্রতিবেদনে উল্লেখ, আঁখি দাস সংস্থার কর্মীদের বলেছিলেন, বিজেপি নেতাদের লংঘনকারী হিসেবে শাস্তি দিলে ভারতে ফেসবুকের বাণিজ্যিক ক্ষতি হতে পারে।
অভিযোগ, সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে হিংসায় মদত দিতে ফেসবুকে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিলেন তেলেঙ্গানার বিজেপি বিধায়ক টি রাজা। কিন্তু সংস্থার বর্তমান ও প্রাক্তন কর্মীদের বক্তব্য অনুযায়ী ফেসবুক ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের হস্তক্ষেপেই ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই বিষয়টিকে শাসক দলের প্রতি সংস্থার ‘পক্ষপাতিত্বমূলক পদক্ষেপ’ বলেই ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
পুলিশের কাছে দায়ের করা চার পাতার অভিযোগপত্রে আঁখি দাস বলেছেন যে, 'ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন ভারতে বিভিন্ন প্রকাশনা দ্বারা ভুল পথে ও বিকৃতভাবে তুলে ধরা হয়েছে। যা পরে সোশাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে যায়।' হিংসাত্মক পোস্টে তাঁর ছবিও ব্যবহার করা হয়েছে হলে অভিযোগ করেছেন ফেসবুক ইন্ডিয়ার পাবলিক পলিসি এক্সিকিউটিভ।
ইতিমধ্যেই ফেসবুকের মুখপাত্র ‘সংস্থা হিংসায় উস্কানিমূলক মন্তব্য বা বিদ্বেষ ছাড়ালে তা নিষিদ্ধ বলে গণ্য করে। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি বা দল নিরপেক্ষ হয়েই ফেসবুক গোটা বিশ্বজুড়ে এই কাজ করে থাকে। যদিও এ ক্ষেত্রে আরও উন্নতির জায়গা রয়েছে। নিরপেক্ষতা বজায় রেখে এই কাজ করতে প্রতিদিনের অডিট বা নজরদারি আরও তীক্ষ্ণ করতে হবে। এতে আমরা ইতিমধ্যেই জোর দিয়েছি।’
মার্কিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের উপর নজর রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংসদের তথ্য-প্রযুক্তি সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান শশী থারুর। তিনি বলেছেন, ‘আমি অবশ্যই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। এ বিষয়ে ফেসবুকের মতামত জানতে চাওয়া হবে।’ সূত্রের খবর যে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে উঠে আসা বিষয়ের ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে ফেসবুককে সমন পাঠাবে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন