'অপেশাদাররা কৌশল নিয়ে আলোচনা করে। পেশাদাররা রসদ নিয়ে আলোচনা করে।' সেনাবাহিনীতে এই প্রবাদ জনপ্রিয়। এই প্রবাদকে মনে রেখেই এখনই ভারত-চিন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় বাহিনী মোতায়েন কীভাবে হতে পারে তার বিবেচনা করছে ভারতীয় সেনা। শীতে নিয়ন্ত্রণরেখার প্রত্যন্ত এলাকায় কীভাবে বাহিনী মোতায়েন হবে আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যেই তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে হবে সেনাকে।
Advertisment
ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রচণ্ড শীতে নিয়ন্ত্রণরেখায় কর্তব্যরত সেনার কাছে রসদ কীভাবে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব তার উপর নির্ভর করছে পুরো পরিকল্পনা। নর্দান কমান্ডের দায়িত্বে থাকা সেনা বাহিনীর এক আধিকারিক, সানডে এক্সপ্রেসকে জানান, 'আরও উচ্চতায় দীর্ঘকালীন ভিত্তিতে সেনা মোতায়েন করতে হলে রসদ পৌঁছানোর বিষয়টি সেনার কাছে চ্যালেঞ্জের হবে। রসদ তৈরি থেকে সরবরাহ- পুরো বিষয়টির উপরই সেনা মোতায়েন নির্ভর করছে। বর্তমানে যেখানে সেনা মোতায়েন রয়েছে তা নিয়ে কোনও চিন্তা থাকার কথা নয়। কিন্তু, শীতে আরও উচ্চতায় ও দুর্গম অঞ্চলে সেনা মোতায়েন করতে হলে তার পরিকল্পনা আগামী ৬ সপ্তাহের মধ্যেই করতে হবে।'
অ্যাডভান্স উইনটার স্টকিংয়ের মাধ্যমে গ্রীষ্মে সেনার কাছে রসদ পৌঁছানো হয়ে থাকে। মূলত জোজিলা রুটের মাধ্যমে শ্রীনগর থেকে লে পর্যন্ত ও মানালি রুট দিয়ে রসদ সেনার কাছে পৌঁছানো হয়ে থাকে। কিন্তু, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বরফ পড়ার কারণে এইসব রুট দিয়ে চলাচল অসমম্ভব হয়ে পড়বে। তাই অনেক উচ্চতায় বাহিনী মোতায়ের রাখতে চাইলে নভেম্বরের মধ্যে রসদ পৌঁছানোর কাজ এই দুই রুট দিয়ে সম্পন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে বিবেচনা করেই বাহিনী মোতায়েন একান্ত প্রয়োজন।
লাদাখে সিয়াচেন বা দ্রাসের মতো বরফ না পড়লেও লাদাখে রসদের যোগান স্থানীয়স্তরে মেলা কার্যত দুষ্কর। সেক্ষেত্রে বাইরের সরবরাহের উপর নির্ভর করতে হবে। সেনা অফিসারের কথায়, 'রসদের জন্য আরও গাড়ির প্রয়োজন। যা জোগাড় করতে হবে। তবে, চ্যালেঞ্জ হল, লে এয়ার বেস থেকে রসদ যোগানের বিষয়টি।' তাপমাত্রার বেশি কমে গেলে এই এয়ার বেস থেকে আর উড়ান ওটা-নামা করতে পারে না। তাই গ্রীষ্মেও এখান থেকে দুপুরের আগে পর্যন্তই বিমান চলালচল করে। এক্ষেত্রে আমেরিকায় সি-১৩০জে বিমান রাশিয়ার আইএল-৭৬ এর থেকে অনেকটাই ভাল।
রসদ যোগানের পাশাপাশি আরও একটা বড় সমস্যা হল, মাইনাস ২৫ ডিগ্রি ঠান্ডায় থাকার জন্য বাহিনীর বিশেষ কাপড়। এত কাপড়ের যোগান কীভাবে অতি অল্প সময়ে হওয়া সম্ভব তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। এছাড়া রয়েছে সেনা তাঁবুর বিষয়ও।