Advertisment

বিভীষিকার দেড় বছর! ডিটেনশন ক্যাম্প থেকে মুক্তি পেল 'ভারতীয়' পরিবার

হার মানেনি নূর হোসেন ও তাঁর পরিবার। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর এল কাঙ্খিত জয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

গত দেড় বছর ধরে বিদেশি তকমা নিয়ে ডিটেনশন ক্যাম্পই ছিল ঠিকানা। একুশের নতুন সূর্যোদয়ের মতো জীবনে এল সুখবর। বছর চৌত্রিশের মহম্মদ নূর হোসেন এবং তাঁর স্ত্রী সাহিরা বেগম ও দুই সন্তান অন্ধকার থেকে আলোয় এলেন। ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালের রায়ে ভারতীয় ঘোষণা করার পর ক্যাম্প থেকে মুক্ত হলেন তাঁরা। মুক্তি পাওয়ার পর নূর বলেছেন, "আমরা গর্বিত ভারতীয়। আসামের বাসিন্দা। আমাদের ভুল করে বাংলাদেশি বলে তকমা দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী বলা হয়েছিল। এটা কি আদৌ সম্ভব! আমি এখানেই জন্মেছি।"

Advertisment

পেশায় গুয়াহাটির রিকশাচালক নূর ও তাঁর পরিবার উদালগুড়ি জেলার লাওডং গ্রামের বাসিন্দা। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, তাঁর দাদু-ঠাকুমার নাম ১৯৫১ সালের এনআরসিতে ছিল। বাবা ও তাঁদের নাম ১৯৬৫ সালের ভোটার লিস্টেও ছিল। স্ত্রী সাহিরা বাবার নাম ১৯৫১ সালের এনআরসিতে উঠেছিল এবং ১৯৬৬ সালের ভোটার তালিকা অনুযায়ী তিনিও দেশের ভোটার ছিলেন। পরিবারের পৈতৃক জমির নথি ১৯৫৮-৫৯ সালের সময়কার ছিল। কিন্তু গুয়াহাটি পুলিশ ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চের পর আসা ব্যক্তিদের বৈধতা খুঁজতে শুরু করে। ২০১৭ সালের আগস্ট মাসে সাহিরার মামলাটি কামরূপ জেলার ফরেনার্স ট্রাইব্যুনালে ওঠে। এই বছরই জানুয়ারিতে নূরের মামলাও বিচারের জন্য ওঠে।

আরও পড়ুন নতুন বছরের উদযাপনে নেই কৃষকরা, জারি আন্দোলন

কোনওরকমে ৪ হাজার টাকা দিয়ে একজন আইনজীবী জোগাড় করেন নূর। কিন্তু স্ত্রীর জন্য কোনও আইনজীবী জোটাতে পারেননি নূর। ২০১৮ সালের ২৮ আগস্ট নূরের আইনজীবী মামলার শুনানিতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। কারণ নূর তাঁর খরচ ওঠানোর মতো জায়গায় ছিলেন না। সেইসময় আইনজীবী তাঁকে পরামর্শ দেন, গুয়াহাটি পালিয়ে যাওয়ার জন্য নাহলে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারে। "কিন্তু আমি কেন পালাব, আমার দোষ কী?" বলেন নূর। ওই বছরই ২৯ মে সাহিরাকে বিদেশি ঘোষণা করে ট্রাইব্যুনাল। পরের বছর মার্চের ৩০ তারিখ নূরকে বিদেশি ঘোষণা করে রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল।

২০১৯ সালের জুন মাসে দম্পতিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর গোয়ালপাড়ার ডিটেনশন ক্যাম্পে তাঁদের পাঠায় পুলিশ। সাহিরা জানিয়েছেন, "দুই ছোট ছোট সন্তানদের দেখার কেউ ছিল না। তাই তাদেরও আমাদের সঙ্গে ক্যাম্পে নিয়ে যাই আমরা। এই কারণে বড় ছেলে শাহজাহানকে স্কুল থেকে ছাড়াতে হয়। জেলের মধ্যে আমার ছেলে-মেয়ার খালি বলত বাড়ি যাওয়ার কথা।" জেলে থাকার সময় তাঁদের পরিবারের লোক গুয়াহাটির মানবাধিকার আইনজীবী আমন ওয়াদুদের সঙ্গে দেখা করেন। এরপর গুয়াহাটি হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়। পরে তা স্থানান্তর হয় ট্রাইব্যুনালে।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Detention Camp nrc Assam caa
Advertisment