রাজকোটের বিজেপি সাংসদ মোহন কুন্ডরিয়া সোমবার মোরবি শহরের মাচ্ছু নদীর তীরে দাঁড়িয়েছিলেন। ঐতিহাসিক ঝুলন্ত সেতু জুল্টো পুল, ভেঙে যাওয়ার পরে তিনি উদ্ধারকাজ, ত্রাণে তদারকি করেছিলেন। তবে, শুধু জনপ্রতিনিধি হিসেবে ওই জায়গায় মোহন কুন্ডরিয়া হাজির ছিলেন, তেমনটা কিন্তু না। সদ্য পরিবারের ১২ জনকে হারিয়েছেন কুন্ডরিয়া। তাঁরাও ব্রিজ ভেঙে হতভাগ্য কয়েকশো লোকের মত মাচ্ছু নদীতে পড়ে গিয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজে তদারকির মধ্যেই তাই বুক চাপড়ে কাঁদতে দেখা গিয়েছে এলাকার সাংসদকে। মোহন কুন্ডরিয়ার বোন মুক্তাকে বিয়ে করেছিলেন সুন্দরজি বোরা। তাঁর চার মেয়ে, তিন জামাই এবং পাঁচ নাতি-নাতনি এই দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন।
Advertisment
দুর্ঘটনায় সুন্দরজির মেয়ে ধারা অমৃতিয়া, ইলা ছাত্রোলা, শোভনা ওরফে শ্রুতি দেত্রোজা এবং একতা জীবনী, ধারার স্বামী হারেশ অমৃতিয়া, তাঁদের দুই সন্তান ঝেনভি এবং ভূমি মারা গিয়েছেন। এছাড়াও ইলার স্বামী মহেশ ছাত্রোলা ও তাঁদের ছেলে নাইটিক এবং শ্রুতির স্বামী ভাবিক, ছেলে আরভও ঘটনার সময় দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেতুতে ছিলেন। শুধু তাই নয়, ধারার বোন দুর্গার মেয়ে বছর ১০-এর কুঞ্জল রায়ানিও মারা গিয়েছেন দুর্ঘটনায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত হারেশ মোরবি শহরের শানালা রোডে নাভা বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি পানের দোকান চালাতেন। আর, মহেশ আহমেদাবাদের রাজকোট জেলা সমবায় ব্যাংকের একটি শাখায় কাজ করছিলেন। একতার স্বামী ভিরামগামের একটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। মৃতদের মধ্যে দেত্রোজারা থাকতেন মোরবি শহরেই। আর, মোরবি জেলার সিরামিক কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহের ব্যবসা চালাতেন শ্রুতির স্বামী ভাবিক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাংসদ মোহন কুন্ডরিয়া বলেন, 'আমার বোনের পরিবারের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই মর্মান্তিক ঘটনাকে বর্ণনা করার মত শব্দ আমার কাছে নেই।' সুন্দরজি এবং তাঁর স্ত্রী অনসূয়া, মোরবি জেলার টাংকার তালুকের জবলপুর গ্রামের কৃষক। তাঁদের ছয় মেয়ে এবং এক ছেলে। যার মধ্যে চার মেয়ে এই দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। রবিবার দুর্ঘটনা এভাবেই যেন কান্নার রোল তুলেছে মোরবিজুড়ে। কীভাবে যে কী হয়ে গেল, এখনও সেটাই যেন কেউ বুঝে উঠতে পারছেন না।