শুক্রবার লখনৌয়ের নাকা হিন্দোলা থানার অন্তর্গত খুরশাদ বাগের বাড়ি থেকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৪৫ বছর বয়সী কমলেশ তিওয়ারিকে। অখিল ভারত হিন্দু মহাসভার প্রাক্তন সদস্য তথা বর্তমানে অখ্যাত হিন্দু সমাজ পার্টির নেতা কমলেশ তিওয়ারিকে হত্যার ঘটনায় এবার ষড়যন্ত্রের অভিযোগকেই সামনে আনছে তিওয়ারির পরিবার। তাঁদের দাবি, কমলেশ তাঁর সুরক্ষাব্যবস্থাকে আরও উন্নীত করতে বারবার অনুরোধ করেছিলেন। খুন হওয়ার কয়েকদিন আগেও তিনি এই অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু কোনও পদেক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
আরও পড়ুন- “বিএসএফদের পক্ষে পদ্মা যদি নিরাপদ না হয়, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা কোথায়?”
এরপরই কমলেশ হত্যার যাবতীয় তদন্তের ভার জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার দাবি জানিয়ে কমলেশ পুত্র সত্যম (২২) বলেন, "পুলিশি সুরক্ষা থাকা সত্ত্বেও আমার বাবা মারা গিয়েছিলেন। হুমকি পেয়েছিলেন বলে সুরক্ষা বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই বিষয়ে কেউ কর্ণপাত করেননি। কিছু দিন আগেও তিনি এই বিষয়ে লখনৌ জেলা প্রশাসন ও পুলিশকে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন।" সত্যম আরও বলেন, "২০১৬ সালে রাজ্য সরকার বাবার সুরক্ষার জন্য ১ জন পুলিশকে নিয়োগ করেছিলেন। পরবর্তীতে বাবার সুরক্ষা কমিয়েই দিয়েছিলেন এবং পুলিশের সংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে একজন সুরক্ষাকর্মী রয়েছে। কিন্তু আমার বাবা মারা যাওয়ার সময় সেই বন্দুকধারীও উপস্থিত ছিলেন না। আমার মনে হয়, এই সুরক্ষাকর্মীর ভূমিকা সম্পর্কেও তদন্ত করা উচিত।"
আরও পড়ুন- ‘ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে, শাহর সঙ্গে কথা বলব’, সীমান্তে গুলিকাণ্ডে মন্তব্য বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর
তবে পুলিশের তরফে এটি অস্বীকার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে শুক্রবার যখন কমলেশ তিওয়ারিকে হত্যা করা হয়, সেই সময় সেই বাড়িতেই ছিলেন সুরক্ষাকর্মী। কিন্তু পুলিশের এই বক্তব্য মানতে নারাজ কমলেশ পুত্রের। সত্যম বলেন, "ময়না তদন্ত শেষে পুলিশ প্রথমে লাশ হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেছিল। আমরা যখন প্রতিবাদ করি, তখন পুলিশ বাহিনী এমন ব্যবহার করে, যে আমার ভাই ও মা আহত হয়েছিল সেই সময়। পরে আমরা মৃতদেহটি সীতাপুরে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে তাঁরা সম্মত হন। দুপুর ২টোর দিকে বাবার দেহ সীতাপুরে নিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলাম।"
আরও পড়ুন- কমলেশ তিওয়ারি হত্যায় আটক ৩, নজরে মুসলিম সংগঠন যোগ
এদিকে, কমলেশ তিওয়ারির এই হত্যার পিছনে স্থানীয় এক বিজেপি নেতাকেই দায়ী করেছেন কমলেশের মা কুসুমদেবী। যদিও এই কথা স্বীকার করেননি সত্যম তিওয়ারি। তিনি বলেন, "এটা ঠিক “স্থানীয় স্থানীয় বিজেপি নেতা এবং আমার বাবার মধ্যে মন্দিরের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। বিষয়টি আদালতে এখনও বিচারাধীন রয়েছে। আমার ঠাকুমা হয়তো রাগ, শোক থেকে তাঁর নাম নিয়েছেন। তবে আমি নিশ্চিত তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত নন।" তবে এই মৃত্যুকে কেন্দ্র করেই শনিবার তিওয়ারির পরিবারের সদস্যরা এবং সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন। এমনকি তাঁদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কমলেশের দেহ দাহ করতেও অস্বীকার করেন তাঁরা। তবে লখনৌর কমিশনার মুকেশ কুমার মেশরাম পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পরে একটি লিখিত আশ্বাস দেওয়ার পরেই কমলেশ তিওয়ারীর দেহ দাহ করা হয়।
Read the full story in English