শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের ডাক দিলেও শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কৃষকরা ব্যারিকেড টপকানোর চেষ্টা করলে হরিয়ানার দিন থেকে ধেয়ে আসে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রবার বুলেট। এতেই মৃত্যু হয় প্রতিবাদরত এক কৃষকের। এদিকে কৃষকের মৃত্যুর পর 'দিল্লি চলো' অভিযান দু'দিনের জন্য স্থগিত রাখার ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি। কৃষক নেতা পান্ধের বলেছেন, 'শুক্রবার প্রতিবাদের নয়া কৌশল নির্ধারণ করা হবে'। বুধবার তরুণ কৃষকের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান।
গতকাল কৃষক আন্দোলনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পাঞ্জাব-হরিয়ানা খানৌরি সীমান্ত। সংঘর্ষে এক বিক্ষোভকারী নিহত এবং প্রায় ডজন খানেক পুলিশ কর্মী আহত হওয়ার পর বুধবার কৃষক নেতারা 'দিল্লি চলো' পদযাত্রা দুদিনের জন্য স্থগিত করেছে। কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের শম্ভু সীমান্তে সাংবাদিকদের বলেছেন যে শুক্রবার সন্ধ্যায় তারা আন্দোলনের পরবর্তী গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করবেন'।
রবিবার রাতে তিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে চতুর্থ দফা আলোচনার পরও মেলেনি কোন সমাধানসূত্র। দুই বিক্ষোভ স্থগিত থাকার পর গতকাল ফের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ডাক দেয় কৃষক সংগঠনগুলি। ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্যের (MSP) আইনি গ্যারান্টি এবং কৃষি ঋণ মুকুব সহ তাদের দাবি আদায়ে হাজার হাজার কৃষক 'দিল্লি চলো যাত্রায়' অংশ নেন। দুপুরের পরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে শুরু করে। ড্রোনের মাধ্যমে কৃষকদের লক্ষ্য করে ছোঁড়া হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল।
শম্ভু এবং খানৌরি সীমান্তে কৃষকদের বিরুদ্ধে 'সর্বশক্তি'কে কাজে লাগানোর জন্য কৃষক নেতা পান্ধের কেন্দ্র ও হরিয়ানা পুলিশের সমালোচনা করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, 'কৃষক নেতা জগজিৎ সিং ডালেওয়াল পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে খানউরি গেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার কৃষকদের আন্দোলনকে স্তব্ধ করার চেষ্টা করছে'।
কৃষকদের 'দিল্লি চলো' পদযাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে, হরিয়ানা সরকার বুধবার সাতটি জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট এবং এসএমএস-এর উপর নিষেধাজ্ঞা ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়িয়েছে। আম্বালা, কুরুক্ষেত্র, কাইথাল, জিন্দ, হিসার, ফতেহাবাদ এবং সিরসা জেলায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে।
কৃষক নেতা বলদেব সিং সিরসা জানিয়েছেন, 'মৃত কৃষকের নাম শুভকরন সিং (২১), তিনি পাঞ্জাবের বাথিন্দা জেলার বাসিন্দা'। পাতিয়ালার হাসপাতালের সুপার এইচএস রেখি সাংবাদিকদের বলেছেন যে 'খানউরি সীমান্ত থেকে তিনজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল, যাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। তিনি জানান, নিহতের মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং বাকি দুজনের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে। যদিও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ কী তা ময়না তদন্তের পরই জানা যাবে বলেও জানান তিনি। এদিকে, কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী অর্জুন মুন্ডা পঞ্চম দফা আলোচনার জন্য কৃষকদের আহ্বান জানিয়েছেন।