আজ থেকে ফের শুরু হচ্ছে দ্বিতীয় দফার প্রতিবাদ। গত সপ্তাহে সরকারের সঙ্গে চতুর্থ আলোচনার পর প্রস্তাবগুলি খতিয়ে দেখতে সময় চাওয়া হয় সংগঠনের তরফে। শেষে জানিয়ে দেওয়া হয় ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার যে বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল কৃষক সংগঠনগুলি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। এর পরই তারা দ্বিতীয় দফায় বুধবার থেকে 'দিল্লি চলো' অভিযান পুনরায় শুরু করার ডাক দেয়।
কৃষকদের 'দিল্লি চলো' মিছিলের পরিপ্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশও রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বাড়িয়েছে। শহরের টিকরি, সিংগু ও গাজিপুর সীমান্তে নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। কৃষক নেতা জগজিৎ সিং ডালেওয়াল বলেছেন, 'সরকারের উচিত কৃষকদের পক্ষে সিদ্ধান্ত নেওয়া। আমরা অনুরোধ করছি যে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লি যেতে চাই। তাই সরকারের উচিত ব্যারিকেড সরিয়ে নেওয়া। সরকার যদি তা করতে না চায় তাহলে আমাদের দাবি মেনে নিক, আমরা আন্দোলন প্রত্যাহার করব'। কৃষক নেতা পান্ধের বলেছেন, 'ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সরকারের কাছে কোন বড় ব্যাপার নয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লিতে যেতে চাই। আমরাও হিংসা চাই না এখন বল সরকারের কোর্টে'।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলন করেন কৃষক নেতারা। বৈঠক শেষে কৃষক নেতা পান্ধের মিডিয়াকে জানিয়েছেন, 'আমরা আলোচনার জন্য সবকিছু করেছি। যখনই আমরা ডাক পেয়েছি, আমরা আলোচনায় বসেছি। যদি কেন্দ্রীয় সরকার এসে বলে যে তারা এমএসপির আইনি গ্যারান্টি দিতে প্রস্তুত, তাহলে আমরা আন্দোলন তুলে নিতে রাজি।
এদিকে কৃষক প্রতিবাদের মধ্যে সরকার সাময়িকভাবে ১৭৭ টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট, ওয়েব লিঙ্ক ব্লক করেছে৷ পিটিআইয়ের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষকদের বিক্ষোভের সঙ্গে যুক্ত ১৭৭ টি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট এবং ওয়েব লিঙ্কগুলি সরকার সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে।
শম্ভু সীমান্তে মিডিয়াকে সম্বোধন করে, কৃষক নেতা সারওয়ান সিং পান্ধের এবং জগজিৎ সিং ডাল্লেওয়াল সরকারকে শম্ভু সীমান্তে ব্যারিকেডগুলি সরানোর আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, 'আমরা শান্তিপূর্ণভাবে দিল্লি পর্যন্ত মিছিল করে যেতে চাই। আমরা কোন হিংসা চাই না। তবে আমরা জাতির স্বার্থে "মৃত্যুর জন্যও প্রস্তুত"। "যদি সংঘর্ষ হয়, তবে যারা এই ব্যারিকেডগুলি তৈরি করেছে তারা দায়ী থাকবে.. যারা আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করেছে যারা আমাদের দিকে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ার নির্দেশ দিয়েছে আজ যা ঘটতে চলেছে তার জন্য তারাই দায়ী,”। আন্দোলনকারী পাঞ্জাবের কৃষক নেতারা বুধবার সকাল ১১ টায় তাদের 'দিল্লি চলো' প্রতিবাদ ফের শুরু করতে চলেছেন।
আরও পড়ুন : < Khalistani Controversy: শুভেন্দুর ‘খালিস্তানি’ মন্তব্যে উত্তাল দেশের শিখ সমাজ, তোপ দাগল পাঞ্জাবের গুরদ্বার কমিটি>
কৃষকদের দাবিটা কী নিয়ে: কৃষকরা ২৩ টি ফসলের জন্য ন্যূনতম সমর্থন মূল্য (MSP) গ্যারান্টি্, পাশাপাশি ঋণ মুকুবের দাবি। তারা স্বামীনাথন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন, কৃষক ও ক্ষেতমজুরদের জন্য পেনশন, বিদ্যুতের দাম না বাড়ানো, আগের বিক্ষোভের জেরে পুলিশি মামলা প্রত্যাহার এবং ২০২১ সালের লখিমপুর খেরি হিংসার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের "ন্যায়বিচার", ভূমি অধিগ্রহণ আইন, ২০১৩ পুনঃস্থাপন এবং ২০২০-২০২১ সালে পূর্ববর্তী আন্দোলনের সময় নিহত কৃষকদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি।