দিল্লির সিংঘু, টিকরি সীমানা খালি করতে শুরু করলেন কৃষকরা। তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের পর এবার আন্দোলন তুলছে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চা। এদিন সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, দিল্লির বিভিন্ন সীমানা থেকে অবস্থান আন্দোলন তুলে নেওয়া শুরু হয়েছে। এবার নিজেদের রাজ্যে ফিরে যাবেন কৃষকরা।
গুরু নানকের জন্মদিনে তিনটি কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদেও কৃষি আইন প্রত্যাহার বিল পাস হয়েছে। কৃষকদের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় সরকার তিনিট আইন বাতিল করায় আন্দোলন তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কৃষক সংগঠনগুলি।
প্রতিবাদী কৃষকরা শনিবার থেকে তাঁদের বছরব্যাপী আন্দোলন তুলতে শুরু করেছেন। দিল্লির টিকরি এবং সিংঘু সীমানা খালি করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। শুক্রবার সকালেই দিল্লির টিকরিতে অস্থায়ী তাঁবু ভেঙে ফেলতে শুরু করেন কৃষকরা। জিনিসপত্র গুছিয়ে এবার বাড়ি ফেরার পালা। শুক্রবারের পর শনিবারও সেই তৎপরতা জারি।
উল্লেখ্য, দেশের কৃষি ক্ষেত্রে আমূল সংস্কারের কথা বলে তিনটি কৃষি আইন তৈরি করেছিল কেন্দ্রের মোদী সরকার। যদিও শুরু থেকেই সেই আইনের প্রতিবাদে সরব হয় দেশের একটি বড় অংশের কৃষক সংগঠন। আইন বাতিলের দাবিতে এরপর দিল্লির সীমানা ঘেরাও করে রেখে চলে অবস্থান আন্দোলন। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই আন্দোলনের জেরে অসুস্থ, রোগাক্রান্ত হয়ে বহু কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তবুও আন্দোলন থেকে একচুলও সরেননি কৃষকরা। দাঁতে দাঁত চেপে জারি থেকেছে 'মরণপণ লড়াই'।
কৃষক নেতাদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা করেছে কেন্দ্র। নয়া আইনে কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষিত থাকার সওয়াল করে কৃষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে গিয়েছেন মোদী-শাহ-রাজনাথরা। তবে বারবার সেই আলোচনা নিষ্ফলা থেকেছে। কেন্দ্র কৃষি আইন বলবৎ রেখে রফাসূত্র খোঁজার চেষ্টা করছিল। যদিও কৃষকরা তিনটি আইনই বাতিলের দাবিতে শুরু থেকে অনড় ছিলেন।
আরও পড়ুন- দৈনিক সংক্রমণ নিম্নমুখী, ৫৫৯ দিনে সর্বনিম্ন করোনা অ্যাক্টিভ কেস
এদিকে, ততদিনে আন্দোলরত কৃষকদের হয়ে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছেন সমাজের বিশিষ্টরা। রাজ্যে-রাজ্যে চলেছে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। এমনকী দিল্লিতে কৃষকদের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের আন্দোলনে সামিল থেকেছেন বিশিষ্টজনেরা। অন্যদিকে, এনডিএ সরকারের শরিকদের অনেকেও কৃষক-স্বার্থে আইন বাতিলের দাবিতে আওয়াজ তোলেন। জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শেষমেশ ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়ে আইন কার্যকর করা স্থগিত রাখে মোদী সরকার।
তবে তাতেও কৃষকরা অবস্থান থেকে সরেননি। আইন বাতিল না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে চলে সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার লড়াই। সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার নেতৃত্বে কৃষকদের ৪০টি সংগঠন আন্দোলন চালিয়ে যায়। শেষমেশ গুরু নানকের জন্মদিনে আসে ঐতিহাসিক সেই দিন। নতুন তিনটি কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
Read full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন