দেশে আছড়ে পড়েছে করোনা তৃতীয় ঢেউ। রোজই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ। স্বাস্থ্য দফতরের বিবৃতি অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ। এদিকে বেশ কয়েকটি রাজ্য উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। সেখানে রোজই লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমণ সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। মহারাষ্ট্রে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত পজিটিভিটি রেট ছিল ২০.৩৫ শতাংশ। ২০ জানুয়ারি তা বেড়ে হয়েছে ২২.১২ শতাংশ। কর্ণাটকে ৬.৭৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৫.১২ শতাংশ। তামিলনাড়ুতে ১০.৭০ শতাংশ থেকে বেড়ে পজিটিভিটি রেট হয়েছে ২০.৫০ শতাংশ। কেরলে ১৩ জানুয়ারি করোনা পজিটিভিটি রেট ছিল ১২.২৮ শতাংশ। ২০ জানুয়ারি তা বেড়ে হয়েছে ৩২.৩৪ শতাংশ। রাজধানী দিল্লিতে ২১.৭০ শতাংশ থেকে বেড়ে করোনা পজিটিভিটি রেট বেড়ে হয়েছে ৩০.৫৩ শতাংশ। উত্তর প্রদেশে ৩.৩২ শতাংশ থেকে বেড়ে পজিটিভিটি রেট হয়েছে ৬.৩৩ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব বলেন, ”এই রাজ্যগুলির সঙ্গে আমরা ক্রমাগত যোগাযোগ করছি এবং পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হচ্ছে”। তবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় ঢেউয়ের মধ্যে কিছু পার্থক্য রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুই ঢেউয়ের তুলনামূলক বিচার করে এক বিবৃতি দিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক। প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার বর্তমান পরিস্থিতিকে তৃতীয় ঢেউ হিসেবে আখ্যা দিল কেন্দ্র। জানানো হল, দ্বিতীয় ঢেউয়ের তুলনায় তৃতীয়তে মৃত্যুহার অনেক কম। হাসপাতালে ভর্তির ক্ষেত্রেও একই বিষয় দেখা যাচ্ছে।
আইসিএমআর-এর ডিরেক্টর জেনারেল বলরাম ভার্গব বললেন, তৃতীয় ঢেউতে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে না একমাত্র টিকাকরণের কারণেই। দ্বিতীয় ঢেউতে দিল্লিতে ভয়াবহ অবস্থা হয়েছিল। হাসপাতালে ঠাঁই পাওয়াই হয়েছিল দুষ্কর। এবারও রাজধানীতে সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তবে এবার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা অনেক কম। তবে দেশের পজিটিভিটি রেট এখন ১৬ শতাংশ যা অনেকটাই বেশি বলে জানিয়েছেন কোভিড টাস্কফোর্সের প্রধান ড. ভিকে পল।
তিনি এর জন্য ওমিক্রন সংক্রমণকেই দায়ী করেছেন। রাজধানীর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সংক্রমণ বেড়েছে মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাট, ওড়িশা, দিল্লি এবং রাজস্থানে। দ্বিতীয় ঢেউয়ের সঙ্গে তুলনা করে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তরফে জানান হয়েছে তুলনামূলক ভাবে এই রাজ্যগুলিতে সংক্রমণ রকেট গতিতে বাড়লেও মৃত্যুহার আগের থেকে অনেক কম। তবে বাংলার মৃত্যু চিন্তায় রেখেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে। আগের ওয়েভের সঙ্গে এখনের তুলনা করে স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ জানালেন, ২০২০-র ৩০ এপ্রিল, যখন দ্বিতীয় ঢেউ শীর্ষে ছিল, সে সময় দৈনিক সংক্রমণ ছিল ৩ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৫২। আজকের পরিসংখ্যানে এই ক্ষেত্রে মিল আছে। কিন্তু তখন অ্যাক্টিভ কেস ছিল ৩১ লক্ষ ৭০ হাজার ২২৮। আজ তা ১৯ লক্ষ ২৪ হাজার ৫১। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ৩০ এপ্রিল, ২০২০-তে দৈনিক মৃত্যু ছিল ৩০৫৯ যা আজ ৩৮০।