বন্ধ ঘরের ভিতর থেকে বাবা ও ছেলের মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো শহরের দক্ষিণের অংশে। পুলিশ সুত্রে খবর, দেনার দায়ে ছেলেকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন বাবা। হাড়হিম করা এই ঘটনাটি ঘটেছে সোনারপুর গড়িয়াতে।
গড়িয়ার নবশ্রী বাজার শিবমন্দির এলাকার বাসিন্দা সুব্রত দাস পেশায় গ্যাস সিলিন্ডার সরবরাহকারী৷ বছর কয়েক আগে দাম্পত্য অশান্তির জেরে বাড়ি ছেড়ে চলে যান তাঁর স্ত্রী৷ বছর তেরোর একটি সন্তানও ছিল তাঁদের৷ স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর সন্তানকে নিয়েই ভাড়া বাড়িতেই থাকতেন সুব্রত৷ গোপাল দাস নামে বছর তেরোর ওই বালক বরদাপ্রসাদ স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র৷ স্কুলের পর বাবার অনুপস্থিতিতে প্রতিবেশীদের কাছেই থাকত সে৷
শনিবার সকালে দীর্ঘক্ষণ বাড়ির দরজা বন্ধ দেখে একটু আশ্চর্য হন প্রতিবেশীরা৷ অনেক ডাকাডাকিতেও সুব্রত ও তাঁর ছেলের কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি৷ খবর পৌঁছয় বাড়িওয়ালার কাছে। বাড়িওয়ালা এসে ডাকাডাকি করলেও কোন সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি। বাধ্য হয়ে খবর দিতে হয় সোনারপুর থানায়।
আরও পড়ুন: বিষমদ কাণ্ডে খোঁড়া বাদশার যাবজ্জীবন, ফাঁসি চায় মৃতদের গ্রাম
সোনারপুর থানার পুলিশ এসে ঘরের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকতেই চক্ষু চড়কগাছ। ঘরের মধ্যেই সিলিং থেকে ঝুলছে সুব্রতর দেহ৷ বিছানার উপর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে গোপালের দেহ৷ ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট সংগ্রহ করে পুলিশ।পুলিশ জানিয়েছে, সুইসাইড নোটে সুব্রত লিখে গিয়েছেন যে তাঁর এবং তাঁর ছেলের মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।
ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছে যে সুব্রত বেশ কিছুদিন যাবৎ রোজগার ছাড়া বসেছিলেন। এলাকায় কিছু দেনাও করেন, এবং সকাল বিকেল পাওনাদারদের তাগাদায় চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। অবশেষে মানসিক অবসাদ থেকে ছেলেকে খুন করে বাবা আত্মঘাতী হয়েছেন বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে অনুমান। তদন্তের স্বার্থে ওই ঘরটি সিল করে দিয়েছে পুলিশ, পাশাপাশি দুটি মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।