মেয়ের গণধর্ষণের অভিযোগ লেখানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন নিগৃহীতার বাবা। যদিও উত্তর প্রদেশের এই ঘটনায় অভিযুক্তদের কাঠগড়ায় তুলেছে মৃতের পরিবার। জানা গিয়েছে, মেয়ের গণধর্ষণের অভিযোগ জানাতে থানায় গিয়েছিলেন মঙ্গলবার। যাঁদের নামে রিপোর্ট লিখিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জনই উত্তরপ্রদেশের এক পুলিশকর্মীর সন্তান। এমনকি, এব্যাপারে খোদ পুলিশ দুষ্কৃতীদের সঙ্গে সহযোগিতা করেছে বলেও অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার।
বুধবার ১৩ বছরের কন্যাকে নিয়ে হাসপাতালে মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য এসেছিলেন ওই ব্যক্তি। চিকিৎসকরা যখন কিশোরীকে পরীক্ষা করছেন, তখন চা খেতে বাইরে বেরিয়েছিলেন তিনি। হাসপাতালের সামনেই তাঁকে পিষে চলে যায় একটি ট্রাক। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
১৩ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের মামলায় মঙ্গলবার অভিযোগ দায়ের হয় দীপু যাদব, সৌরভ যাদব এবং গোলু যাদবের বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে দীপু এবং সৌরভের বাবা উত্তরপ্রদেশের কনৌজ জেলায় কর্মরত এক পুলিশ সাব ইনস্পেক্টর। নির্যাতিতার পরিবার জানিয়েছে, গোলুকে গ্রেফতার করলেও বাকি দুই অভিযুক্ত এখনও গ্রেফতার হয়নি। তাই ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করার ঠিক একদিনের মাথায় নির্যাতিতার বাবার এ ভাবে দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে কাকতালীয় বলে মানতে পারছে না তাঁর পরিবার। অভিযোগ, থানায় রিপোর্ট লেখানোর পর থেকেই হুমকি শুনতে হচ্ছিল। মূল অভিযুক্তর দাদা বাড়িতে এসে হুমকি দিয়ে বলে গিয়েছে, ‘সাবধান! আমার বাবা কিন্তু পুলিশের সাব ইনস্পেক্টর!’ তাই তাঁরা একরকম নিশ্চিত, ধর্ষকরাই রয়েছেন এই দুর্ঘটনার নেপথ্যে।
যদিও কানপুর পুলিশ নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছে। কানপুর পুলিশ প্রধান প্রীতিন্দ্র সিংহ জানিয়েছেন, নির্যাতিতার বাবা অভিযোগ দায়ের করার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। এরই মধ্যে এই মামলায় পাঁচটি তদন্ত দল গঠন করেছি আমরা। তদন্ত শুরুও হয়েছে। এ ছাড়া নির্যাতিতাও এখন অনেকটা সুস্থ বলে জানান প্রীতিন্দ্র। যদিও ধর্ষণে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীর দুই পুত্রকে কেন গ্রেফতার করা হয়নি সে ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।
কানপুরের জেলাশাসক আলোক তিওয়ারি বলেন, ‘সরকার এবং প্রশাসন নির্যাতিতার পরিবারের পাশে আছে। তাদের সুবিচার পাইয়ে দেবেই তারা। অভিযুক্তরা কড়া সাজা পাবে।’