'আফতাবের সঙ্গে দেখা হওয়ার আগে শ্রদ্ধা একদম অন্যরকম ছিল। হায়, যদি আগে সব জানতে পারতাম!' মেয়ের খুনের পর এখন বিলাপ করছেন বিকাশ ওয়াকার। দিল্লির মেহরৌলি হত্যাকাণ্ডে নিহত বছর ২৭-এর শ্রদ্ধা ওয়াকারের বাবা। এবছরের মে মাসে খুন দিল্লির মেহরৌলিতে খুন হয়েছেন শ্রদ্ধা। তাঁর দেহ কেটে টুকরো করে সরিয়ে ফেলেছিল লিভ-ইন পার্টনার আফতাব পুনাওয়ালা।
সেই অভিযোগে ইতিমধ্যেই পুলিশের জালে ধরা পড়েছে অভিযুক্ত ওই যুবক। এখন গোটা দেশ সেই চর্চায় সরগরম। শ্রদ্ধা ও আফতাব, দু'জনেই মহারাষ্ট্রের পালঘর জেলার ভাসাইয়ের বাসিন্দা। তবে, পরস্পরকে কেউই আগে থেকে চিনত না। একটা ডেটিং অ্যাপের সূত্রে ২০১৯-এ আলাপ। আর, তারপরই বাড়ির অমতে প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছেড়েছিল শ্রদ্ধা। এসে উঠেছিল দিল্লির মেহরৌলির এক ফ্ল্যাটে। গত মে মাসে সেই ভাড়া করা ফ্ল্যাটেই তাঁকে খুন হতে হয়েছে।
ছয় মাস ধরে ঘটনাটা চাপা ছিল। শনিবারই তা প্রকাশ্যে এসেছে। পুলিশকে অভিযুক্ত জানিয়েছে, সে তার লিভ-ইন পার্টনার শ্রদ্ধার শরীরটা ৩০ থেকে ৩৫টি অংশে কেটেছিল। তারপর মাস তিনেক ধরে সেই দেহাংশ ফেলে এসেছে মেহরোলির জঙ্গলে। মেয়ের সঙ্গে যা হয়েছিল, সংবাদমাধ্যমে সবই জানতে পারছেন বিকাশ ওয়াকার। তবুও সব যেন এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না।
ঘরে উপস্থিত সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বললেন, 'জিজ্ঞাসাবাদের সময় আফতাব পুনাওয়ালা যা বলেছে, সেটা যদি ও করে থাকে, ফাঁসিতে ঝোলানো উচিত। আমি মনে করি মেয়েকে খুন করে, এত মাস সবকিছু লুকিয়ে রাখার জন্য কঠোরতম শাস্তিই ওর প্রাপ্য। কী ঘটেছে, আপনারা সবই জানেন। ওঁর বন্ধুরা আমাকে প্রথমে খবরটা দিয়েছে। দীর্ঘদিন ওঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।'
আরও পড়ুন- শিউড়ে উঠছেন তদন্তকারীরা, ক্রাইম সিরিজ দেখে কীভাবে খুনের পরিকল্পনা করেছিল দিল্লির আফতাব?
দিল্লি পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা এই মামলার তদন্ত করছেন। মঙ্গলবার তারা অভিযুক্ত আফতাব পুনাওয়ালাকে নিয়ে সরেজমিনে তদন্ত সারেন। আফতাবকে মেহরৌলির জঙ্গলে নিয়ে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধার দেহাংশ উদ্ধারের জন্য। এই খুনের ব্যাপারে তদন্তের জন্য তদন্তকারীরা আফতাব এবং শ্রদ্ধা, উভয়ের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
এই তদন্তের গতিপ্রকৃতি সম্পর্কে অতিরিক্ত ডিসিপি (দক্ষিণ দিল্লি) অঙ্কিত চৌহান বলেন, 'অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সে জানিয়েছে, ছোটখাটো বিষয় নিয়েও তাদের মধ্যে হামেশাই ঝামেলা হত। মে মাসে তারা দিল্লিতে চলে আসে। সেখানেও তাদের মধ্যে বহুবার ঝামেলা হয়েছে। ঝামেলার সময় অভিযুক্ত তার লিভ-ইন পার্টনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তারপর খণ্ড খণ্ড করে দেহ কেটে জঙ্গলে ফেলে দেয়। আমরা এখন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জঙ্গল থেকে দেহাংশ উদ্ধারের চেষ্টা করছি। আর, সেগুলো পাওয়া গেলেই ফরেনসিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে। অভিযুক্ত এখন পুলিশি হেফাজতে আছে।'
Read full story in English