Stan Swamy Death: জেলবন্দি ফাদার স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দেশ। তাঁর মৃত্যুতে দুঃখপ্রকাশ করলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও। এলগার পরিষদ মামলায় জেলবন্দি এই সমাজকর্মীর মৃত্যুতে হেমন্ত সোরেন টুইট করে লেখেন, "ফাদার স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুতে স্তম্ভিত ও শোকাহত। সারাটা জীবন আদিবাসীদের অধিকার রক্ষাৎ জন্য উৎসর্গ করেছেন তিনি। তাঁর গ্রেফতারি ও জেলবন্দি রাখার তীব্র প্রতিবাদ করেছিলাম। কেন্দ্রীয় সরকার তাঁর মৃত্যুর জন্য, সময়মতো চিকিৎসা না করা এবং এমন নির্যাতনের জন্য জবাবদিহি করুক।"
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে স্ট্যান স্বামী ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে সরকারের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করেছিলেন। তফসিলি জাতি-উপজাতি শ্রেণির ৭২ জনকে দীর্ঘ কারাবাসের বিরুদ্ধে। তাঁদের বিরুদ্ধে উগ্র বামপন্থার অভিযোগে ইউএপিএ ধারায় পশ্চিম সিংভুম জেলায় মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকার। তার তিন বছর পর স্ট্যান স্বামীকে গ্রেফতার করে এনআইএ। ভীমা-কোরেগাঁও সংঘর্ষে মাওবাদী যোগের অভিযোগে তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় মামলা হয়। আট মাসেরও বেশি সময় ধরে ৮৪ বছরের এই যাজককে জেলবন্দি রাখা হয়। এমনকী চিকিৎসা পরিষেবা না দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে। বারবার তাঁর জামিনের বিরোধিতা করা হয়।
আরও পড়ুন জামিন শুনানির মধ্যেই মৃত UAPA আইনে ধৃত Stan Swami, রবিবার থেকে ছিলেন ভেন্টিলেটরে
মানবাধিকার সংগঠন ছাড়াও হেমন্ত সোরেনের মতো বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব তাঁর মৃত্যুতে শোকজ্ঞাপন করেছেন। বরাবর সমাজের পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন স্ট্যান স্বামী। এনআইএ তাঁকে গ্রেফতার করার আগে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ফাদার। সওয়াল করেন, তাঁর অপরাধটা কী, তরুণ আদিবাসীদের প্রতি রাষ্ট্রের বঞ্চনা এবং নিজেদের অধিকারের জন্য সরব হওয়াদের মাওবাদী তকমা দিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্যই তাঁকে নিশানা করছে সরকার।
আদতে তামিলনাড়ুর ত্রিচির বাসিন্দা স্ট্যান স্বামী ঝাড়খণ্ডকেই নিজের ঘর বানিয়ে ফেলেন। কণ্ঠহীনদের জন্য সোচ্চার হয়েছিলেন। সাতের দশকে ফিলিপিন্সে পড়াশোনা করার সময়ও একাধিক বার সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়। দেশে ফিরে ইন্ডিয়ান সোশ্যাল ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর হিসাবে কাজ করেন তিনি বেঙ্গালুরুতে। তারপর সেই কাজ ছেড়ে জামশেদপুরে চলে আসেন। এরপর চাইবাসাতে আদিবাসীদের সঙ্গে থেকে তাঁদের অধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন।
ঝাড়খণ্ড জনাধিকার মহাসভা স্ট্যান স্বামীর মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করে একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, "স্ট্যান মানুষের লড়াই ও স্মৃতিতে বেঁচে থাকবেন। তাঁর মৃত্যু হল রাষ্ট্রীয় খুনের পরিণাম। এর জন্য কেন্দ্র ও এনআইএ সম্পূর্ণ রূপে দায়ী এবং আমরা স্ট্যানের মৃত্যুতে তাদের ভূমিকার তীব্র নিন্দা করছি।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন