স্বস্তি পেলেন বর্ষীয়ান উকিল ইন্দিরা জয়সিং এবং আনন্দ গ্রোভার। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনোরকম দমনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারবে না সিবিআই বলে যে স্থগিতাদেশ জারি করেছিল বম্বে হাইকোর্ট, তা বৃহস্পতিবার বজায় রাখল সুপ্রিম কোর্ট। উল্লেখ্য, বিদেশি তহবিল নিয়ন্ত্রণ বিধি (Foreign Contribution (Regulation) Act বা FCRA) লঙ্ঘনের অভিযোগে এই দুই উকিলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সিবিআই।
তবে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ জয়সিং এবং গ্রোভারের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এনজিও 'লয়ার্স কালেক্টিভ'-কে একটি জনস্বার্থ মামলায় নোটিশ জারি করেছে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, 'লয়ার্স কালেক্টিভ' বিদেশি তহবিল গ্রহণ করে FCRA লঙ্ঘন করেছে কিনা, তার দ্রুত তদন্ত হোক।
আরও পড়ুন: ইন্দিরা জয়সিংদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলি ঠিক কী
মামলায় গ্রোভারকেও অভিযুক্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই মামলার ভিত্তি হলো স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছে জমা দেওয়া 'লয়ার্স কালেক্টিভ'-এর রিটার্ন, যাতে সংগঠনের তরফে বিদেশি তহবিল গ্রহণের ক্ষেত্রে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ। প্রসঙ্গত, বিদেশি তহবিল "রাজনৈতিক কার্যকলাপে" ব্যবহার করার অভিযোগে ২০১৬ সালে এই এনজিও-র লাইসেন্স বাতিল করে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে বলা হয় যে জয়সিং, যিনি পূর্ববর্তী ইউপিএ সরকারের শাসনকালে ভারতের অতিরক্ত সলিসিটর জেনারেল ছিলেন, সরকারি কর্মচারী থাকাকালীন বিদেশি তহবিল গ্রহণ করে FCRA-র নিয়ম লঙ্ঘন করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দাবি, ২০০৯, ২০১১ এবং ২০১৪ সালে কিছু সাংসদ এবং মিডিয়ার একাংশের কাছে প্রচারের খাতে এই বিদেশি তহবিল থেকে ১৩ লক্ষ টাকা খরচ করা হয়, এবং র্যালি/ধর্না ও নতুন আইনের খসড়া নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিংয়ের বাড়িতে সিবিআই
তাদের নামে জারি করা সিবিআই-এর এফআইআর যাতে বাতিল করা হয়, এই আবেদন জানিয়ে বম্বে হাইকোর্টে মামলা করে 'লয়ার্স কালেক্টিভ'। এই মামলায় তাদের কিছুটা স্বস্তিও দেয় হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতা করে সিবিআই বলে যে হাইকোর্টের রায় কার্যত "ফৌজদারি বিধির ৪৩৮ ধারায় অভিযুক্ত/বিবাদীকে আগাম জামিন দেওয়ার নির্দেশ; তাও আবার ৪৩৮ ধারায় উল্লেখিত বাধ্যতামূলক শর্ত না মেনে"।
সিবিআই আরও বলে, তাদের এফআইআর আইনত বৈধ নয়, এই নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে এসে তবেই হাইকোর্ট তদন্তে স্থগিতাদেশ জারি করতে পারে। সিবিআই-এর আবেদনে বলা হয়েছে যে "শুধুমাত্র ২০১৬ সালের রিপোর্ট পর্যবেক্ষণ করেই এই এফআইআর দায়ের হয়েছে, এই সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন কারণে" তার অন্তর্বর্তী রায় ঘোষণা করেছে হাইকোর্ট।