করোনা-লকডাউন জোড়া ধাক্কায় দেশের অর্থনীতির অবস্থা সংকটজনক। বন্ধ শিল্পক্ষেত্র থেকে ব্যবসা। কিন্তু এই পরিস্থিতিতে কৃষিপ্রধান দেশ ভারতকে স্বস্তি দিচ্ছে সেই কৃষিক্ষেত্র। গত বছরের মে মাস থেকে এই বছরের মে মাস পর্যন্ত সারের খুচরো বিক্রি বেড়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। যা কার্যত রেকর্ড।
কেন্দ্রীয় সার বিভাগের তথ্যানুযায়ী ২০১৮ -২০১৯ সালের মে মাসে সারা ভারতে মোট সার বিক্রি হয়েছিল ২০.২৪ লক্ষ টন। আর ২০১৯-২০ মে মাসে দেশে এখনও পর্যন্ত মোট সার বিক্রির পরিমাণ ৪০.০২ লক্ষ টন। যা প্রায় দ্বিগুণ। শুক্রবার প্রকাশিত ২০১৯-২০ জিডিপি রেকর্ড অনুযায়ী ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে সার কেনার চাহিদা। এক নজরে দেখে নেওয়া যাকঃ
জাতীয় পরিসংখ্যান বিভাগের মতে, ২০১৯ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরে কৃষিক্ষেত্রে ৩.৬ শতাংশ বৃদ্ধি দেখতে পাওয়া গিয়েছে। ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত এই ক্ষেত্রটিতে বৃদ্ধির হার ৫.৯ শতাংশ। ওই একই বছরে সামগ্রিক অর্থনীতির সঙ্গে যদি বিচার করা হয় তাহলে দেখা যাবে অনেকটাই বৃদ্ধির সম্ভাবনায় আশা জাগিয়ে তুলছে এই ক্ষেত্রটি।
দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি একটি সার সংস্থার প্রধান আর্থিক আধিকারিক বলেন, "কৃষকরা এখন ক্রয় করছেন। আর আমরা পরিস্কার দেখতে পাচ্ছি সারের চাহিদা। সাধারণত আমাদের ৭০ শতাংশ ডিলাররা ধার-এ আমাদের থেকে জিনিষ নেন। খারিফ শস্যের মরসুমে বিক্রির ক্ষেত্রে এই ধারের সময়সীমা এপ্রিলে ৭৫-৯০ দিন পর্যন্ত বাড়ানো হয়, যা মে মাসে থাকে ৪৫-৬০ দিন, জুনে ১৫-৩০ দিন এবং জুলাইয়ে ৭-১০ দিন। কিন্তু এই বছর ৩০ শতাংশ বিক্রি হয়েছে ধারে। ডিলাররা ৭০ শতাংশ অগ্রিম নগদ দিয়ে সার কিনে নিয়ে গেছেন।"
একটি সার সমবায় কমিটির এক্সিকিউটিভ বলেন, "গত বছরে অনেকদিন বর্ষা থাকায় রবি মরসুমে সারের চাহিদা বেশি ছিল। কারণ বর্ষার জল দিয়েই ভূগর্ভস্থ জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হয়েছিল। কৃষকরা তাই অনেক বেশি বীজ রোপণ করতে পেরেছিলেন। তারা আসন্ন খারিফ শস্যের সময়ে প্রাক-বর্ষা-পূর্ব বৃষ্টিপাত জমিতে ব্যাপক আর্দ্রতা দিয়েছে।" এর ফলে বিভিন্ন সারের বার্ষিক ক্রয় অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। এপিল-মে মাসে ইউরিয়ার চাহিদা বেড়েছে ৬৩.৬ শতাংশ, ডি-অ্যামোনিয়াম ফসফেটের চাহিদা বৃদ্ধি হয়েছে ১০৪.৮ শতাংশ, নাইট্রোজেন-ফসফরাস-পটাশ-সালফার যৌগের সারের চাহিদা গত বছরের তুলনায় ১২৩.৭ শতাংশ বেড়েছে।
কৃষি শিল্পক্ষেত্রের এক সূত্র বলেন, "লকডাউনের কারণে এপ্রিলে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল সারের বিক্রি। লকডাউনের কারণে কৃষি উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার চিন্তায় ডিলাররা স্টক রাখতে চেয়েছিল। পাশাপাশি এও ভাবনাও তাঁদের মনে ছিল যে আগামিতে সারের দাম বাড়তে পারে। তবে এই চাহিদা জুন থেকে আগস্ট মাস অবধি থাকবে কি না সেটাই দেখার।"
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন