কাশ্মীরি পণ্ডিতদের গণহত্যার কাহিনী বড় পর্দায় তুলে ধরা হয়েছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ সিনেমার মাধ্যমে। ১৯৯০ সালে, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের যেভাবে নির্যাতিত করা হয়েছিল, তাদের জন্মভিটে থেকে যেভাবে জোর করে বলপূর্বক উৎখাত করে দেওয়া হয়েছিল এবং হত্যা করা হয়েছিল… সেই সব অন্ধকার ইতিহাসের কথা আম জনতার কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। ইতিমধ্যেই ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ নিয়ে বারবার বিতর্ক দানা বেঁধেছে। তার মাঝেই মধ্যপ্রদেশের এক আইএএস আধিকারিক দাবি করেন, শুধু কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নির্যাতনের চিত্র নয়, দেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষের নির্যাতনের প্রেক্ষাপট নিয়েও একটি সিনেমা করা উচিত। এক টুইটার পোস্টে তিনি এই বার্তা দিয়েছেন। তার এই বার্তা বিতর্কের আগুনে ঘি ঢালবে বলেই মনে করেছেন বিশেষজ্ঞমহল।
আইএএস আধিকারিক নিয়াজ খান একটি টুইট বার্তায় বলেছেন, “‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ ছবিতে দেখানো হয়েছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের যেভাবে নির্যাতিত করা হয়েছিল, তাদের জন্মভিটা থেকে যেভাবে জোর করে বলপূর্বক উৎখাত করে দেওয়া হয়েছিল এবং হত্যা করা হয়েছিল… সেই সব অন্ধকার ইতিহাসের কথা আম জনতার কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন প্রযোজক। তাঁর উচিত একই ভাবে অপর একটি সিনেমা তৈরি করা উচিত যার প্রেক্ষাপট হবে বিভিন্ন রাজ্যে বিপুল সংখ্যক মুসলমান সম্প্রদায়ের দুঃখ,কষ্ট ও যন্ত্রণা। মুসলমানরা কীটপতঙ্গ নয়, মানুষ এবং দেশের নাগরিক”।
দ্য কাশ্মীর ফাইলস সিনেমাটি ১১ মার্চ মুক্তি পায় এবং শুরুতেই বক্স অফিসে শোরগোল ফেলে দেয়। মুক্তির পর প্রথম দিনেই সাড়ে তিন কোটি টাকারও বেশি ব্যবসা করেছে সিনেমাটি। এরপর দ্বিতীয় দিনে তা বেড়ে হয়েছে সাড়ে আট কোটি টাকা। গুজরাট, উত্তরপ্রদেশ এবং মধ্যপ্রদেশ সহ বিজেপি-শাসিত কিছু রাজ্যে এই ছবিকে করমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
দ্য কাশ্মীর ফাইলস ’নিয়ে ইতিমধ্যেই সারা দেশে হইচই চলছে। জনপ্রিয়তার কারণেই বিপুল টাকার বাণিজ্য করে ফেলেছে ছবিটি। প্রতি দিনই বাড়ছে বাণিজ্যের অঙ্ক। কিন্তু এর মধ্যেই ছবিটি নিয়ে বেশ কিছু বিরুদ্ধ মত উঠে আসছে ছবিটি সম্পর্কে। যেমন এক শ্রেণির দাবি, ছবিটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। তেমনই আর এক শ্রেণির মত, এটি নিখাদ ইতিহাস। এরই মধ্যে ছবিটি নিয়ে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ওমর বলেছেন, এই ছবিতে যা দেখানো হয়েছে, তার অনেক কিছুই সত্যি নয়। তাঁর প্রশ্ন, ‘এটি কি তথ্যচিত্র? তাহলে তো এতে সত্যি ঘটনা দেখানো উচিত। কিন্তু ছবিটি সম্পর্কে তো বলা হচ্ছে, এটি সত্য ঘটনার উপর নির্ভর করে তৈরি ফিচার ফিল্ম।’ ওমরের প্রশ্ন, তাহলে এটিকে ইতিহাস কেন বলা হচ্ছে? এখানেই থামেননি এই রাজনীতিবিদ। তাঁর অভিযোগ, এই ছবিতে নানা রকম ভুল দেখানো হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘যখন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ঘরছাড়া হন, তখন ফারুক আবদুল্লা মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন না। তখন জগমোহন ছিলেন জম্মু এবং কাশ্মীরের রাজ্যপাল। আর তখন ভিপি সিংয়ের সরকার ছিল কেন্দ্রে। সেটি ছিল বিজেপি সমর্থিত সরকার।’ আর তার পরেই এই আইএএস আধিকারিকের এহেন টুইট বার্তা ছবি ঘিরে বিতর্ক যে বাড়াবে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।