Advertisment

মোদী-কোবিন্দের হাত থেকে পেয়েছিলেন পুরস্কার, চরম অর্থকষ্টে এখন দিনমজুর তরুণ

জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ তাঁর উজ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন উপেক্ষা করে নেমে পড়েছেন দিনমজুরের কাজে৷

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

সংসারে চরম আর্থিক অনটন৷ জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কারপ্রাপ্ত তরুণ তাঁর উজ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন উপেক্ষা করে নেমে পড়েছেন দিনমজুরের কাজে৷ বাবা ও দাদার মতোই তিনিও সংসারের হাল ধরতে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে কাজ করে চলেছেন৷ তবে লক্ষ্যে অবিচল তরুণ৷ হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেই জীবন-যুদ্ধে জয়ী হতে চান তিনি৷

Advertisment

নদাফ আজাজ আবদুল রাউফ৷ তরুণের অসম সাহসিকতায় কুর্নিশ জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার৷ বাকি ১৮ কিশোর-কিশোরীর সঙ্গেই মহারাষ্ট্রের নান্দেদ জেলার এই কিশোরকেও জাতীয় সাহসিকতার পুরস্কারে ভূষিত করে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তাঁর হাতে পুরস্কার তুলে দেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী৷

নান্দেদের একটি জলাধারে চারটি মেয়েকে ডুবতে দেখে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল কিশোর আজাজ৷ অসম সাহসিকতার বলে দুটি মেয়েকে সে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়৷ ২০১৮ সালে চরম অর্থনৈতিক অনটনে ভুগতে থাকে নদাফ আজাজ আবদুল রাউফের পরিবার৷ বাধ্য হয়েই বাবা-দাদার সঙ্গে দিনমজুরের কাজে যোগ দেয় কিশোর আজাজ৷ এখন তাঁর ২০ বছর বয়স৷

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ওই তরুণ বলেন, ‘‘২০১৯-এ বাবা ও দাদার সঙ্গে দিনমজুর হিসেবে কাজ শুরু করি৷ পরিবারের প্রত্যেকে কাজ করে বোনের বিয়ের জন্য টাকার জোগাড় শুরু হয়৷ স্বল্প আয় থেকে কিছুটা বোনের বিয়ের খরচের জন্য সরিয়ে রাখতে শুরু করি৷ বাকি পয়সায় চলে সংসার৷ আমি বিজ্ঞানের ছাত্র৷ একাদশ শ্রেণিতে পড়ার খরচ জোগায় কেন্দ্রীয় সরকার৷ তবে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ার খরচ জোগাড় করতে পারিনি৷ টাকার অভাবে কলেজে ভর্তিও হতে পারিনি৷’’

২০২০ সালে বহু কষ্টে আজাজ একটি আর্টস কলেজে ভর্তি হন৷ দ্বাদশ শ্রেণি থেকে ৮২ শতাংশ মার্কস নিয়ে পাশ করেন তিনি৷ মহারাষ্ট্র পুলিশে অফিসার হিসেবে কাজ করতে চান আজাজ৷ তিনি আরও জানিয়েছেন, জেলা পরিষদের তরফে একটি চাকরি পাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করা হলে তিনি তাঁর নিজের পড়ার খরচ নিজেই চালিয়ে নিতে পারবেন৷ বর্তমানে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিতে জোগাড়ের কাজ করেন আজাজ৷

আরও পড়ুন- হিমাচলে ধসের কবলে যাত্রীবাহী বাস! আশঙ্কাজনক অবস্থায় আটকে অন্তত ৪০ জন

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিকের সামনে খানিকটা স্মৃতিমেদুর আজাজ৷ যে কীর্তি তাঁকে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে দিয়েছিল সেটাই স্মৃতিতে ফিরে আসছে বারবার৷ ঠিক কী ঘটেছিল ২০১৭ সালের ৩০ এপ্রিল? আজাজ জানিয়েছেন, নান্দেদের পরিধি গ্রামের কাছে একটি জলাধারে চারটি মেয়েকে ডুবে যেতে দেখেছিলেন তিনি৷ সেই সময় তাঁর নিজের বয়স ছিল মাত্র ১৬৷ মৃত্যু-ভয় উপেক্ষা করেই চারটি মেয়েকে বাঁচাতে জলে ঝাঁপ দেন আজাজ৷ কোনওক্রমে দুটি মেয়েকে বাঁচাতে পারলেও বাকি দুজনের প্রাণ বাঁচেনি৷

আজাজের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রসাসন৷ আজাজের বাবা আবদুল জানিয়েছেন, তাঁর ছেলের অসম সাহসিকতার পুরস্কারস্বরূপ ৪০ হাজার টাকা সাহায্য মিলেছিল জেলা পরিষদের তরফে৷ এমনকী জেলা পরিষদের কর্তারা তাঁর ছেলের জন্য চাকরির মৌখিক আশ্বাসও দিয়ে রেখেছেন৷ আজাজ দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করলে তাঁর জন্য একটি চাকরি খুঁজে দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে জেলা পরিষদের তরফে৷ এছাড়াও তাঁদের থাকার জন্য সরকারি প্রকল্পে একটি বাড়ি দেওয়ারও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে৷

Read full story in English

FinancialCrisis national news Maharashtra
Advertisment