রাশিয়ার ওপর বড়সড় আঘাত করল ন্যাটো। তবে, কোনও আগ্নেয়াস্ত্রে নয়। মস্কোর দীর্ঘদিনের বাধা সত্ত্বেও ন্যাটো ফিনল্যান্ডকে তাদের সদস্য করে নিল। ফলে, আরও চাপে পড়ল পুতিনের দেশ। যারা দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছিল, তাদের ঘিরে ফেলছে আমেরিকা। কারণ, ন্যাটোর মূল মাথা এই আমেরিকা। তার কথা ন্যাটোর ওপর বিরাট প্রভাব ফেলে।
আর, রাশিয়ার একের পর এক প্রতিবেশী দেশ এবং ইউরোপের দেশগুলোকে আমেরিকা ন্যাটোভুক্ত করছে। তার ফলে, চারপাশ থেকে কার্যত আমেরিকার ঘেরাটোপের মধ্যে পড়ে যাচ্ছে রাশিয়া। কারণ, ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর সামরিক শক্তি যে কোনও লড়াইয়ে মিলিতভাবে প্রতিরোধ করে। সেখানে ফিনল্যান্ডের অন্তর্ভুক্তির অর্থ হল, তারা বিপদে পড়লেও আমেরিকা-সহ অন্যান্য ন্যাটোভুক্ত দেশের সেনারা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে এসে সেই যুদ্ধে যোগ দেবে।
এর আগে ফিনল্যান্ডের ন্যাটোভুক্তি ইস্যুতে বড়সড় হুঁশিয়ারি দিয়েছিল রাশিয়া। হুমকি দিয়েছিল, যদি ফিনল্যান্ডকে ন্যাটোর সদস্য করা হয়, তবে তারা পালটা হামলা চালাতে পারে। যেমনটা তারা ইউক্রেন ইস্যুতে করেছে। কিন্তু, রাশিয়ার সেই সব হুমকিকে যে আমেরিকা-সহ অন্যান্য ন্যাটোভুক্ত দেশগুলো আর গুরুত্ব দিচ্ছে না, তা এবার স্পষ্ট হয়ে গেল ফিনল্যান্ডের ন্যাটোয় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে।
শুধু অন্তর্ভুক্তিই নয়, বর্তমানে ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসিঙ্কিতে সেদেশের জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ন্যাটোর পতাকাও উড়তে দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক মহলের দাবি, মঙ্গলবার ন্যাটোয় ফিনল্যান্ডের যুক্ত হওয়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের পর রাশিয়ার ওপর এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় আঘাত। শুধু তাই নয়, ন্যাটোয় ফিনল্যান্ডের সদস্যপদ ইউরোপের নিরাপত্তার মানচিত্রেও এক বড়সড় পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলল।
আরও পড়ুন- হিন্দুধর্মকে ধ্বংস করতে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা চলছে, তার বিরুদ্ধে আমেরিকায় নিন্দা প্রস্তাব পাস
তা হল, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সোভিয়েতের কাছে পরাজয়ের পর ফিনল্যান্ড নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করেছিল। কিন্তু, রাশিয়ার ইউক্রেনে হামলার পর তারা ভীত হয়ে পড়েছিল। তখনই ফিনল্যান্ড জানিয়ে দিয়েছিল যে তারা ন্যাটোয় যোগ দিতে চায়। সেই সময় রাশিয়া তীব্রভাবে ফিনল্যান্ডের মতামতের বিরোধিতা করেছিল। একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছিল যে এতে রাশিয়ার নিরাপত্তা ভীষণভাবে বিঘ্নিত হতে পারে। তার প্রেক্ষিতে তারা পালটা আক্রমণের রাস্তায় হাঁটবে। কিন্তু, তারপরও মঙ্গলবার ফিনল্যান্ড ন্যাটোর সদস্যপদ পেয়ে গেল। এরপর রাশিয়া কী করে, এখন সেটাই দেখার।