আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে রিপাবলিক টিভির মুখ্য সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী সহ আরও দুজনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে আলিবাগ থানার পুলিশ। শনিবার আলিবাগে নিজের বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস দেওয়া মৃতদেহ উদ্ধার হয় অন্বয় নায়েক নামে এক ইন্টিরিয়র ডিজাইনের। বাড়ির অন্য জায়গা থেকে মিলেছে অন্বয়ের মা কুমুদ দেবীর মৃতদেহও। মৃতদেহের কাছ থেকে মেলা একটি সুইসাইড নোটের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে অর্ণব গোস্বামী, স্কিমিডিয়ার ফিরোজ শেখ এবং স্মার্ট নেটওর্য়াকের নীতীশ সারদার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ।
মৃত অন্বয় নায়েকের স্ত্রীর অভিযোগ, রিপাবলিক টিভি বকেয়া না মেটানোয় আত্মহত্যা করেছেন তাঁর স্বামী। এর পরিপ্রেক্ষিতে রিপাবলিক টিভির তরফ থেকে শনিবারই একটি বিবৃতি জারি করা হয়েছে। ওই বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়েছে, কিছু স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী অন্বয়ের মৃত্যুকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।
আরও পড়ুন, গুরুগ্রামে প্রকাশ্যে নমাজ পাঠে আপত্তি! কেন?
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘এ ধরনের মিথ্যা তথ্য যারা প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’ ওই বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কনকর্ড ডিজাইনস প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে ২০১৬-র ডিসেম্বর নাগাদ যে চুক্তি হয়, সেই চুক্তি মোতাবেক সমস্ত বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে একইসঙ্গে জানানো হয়েছে ‘‘এ সম্পর্কিত সমস্ত তথ্যপ্রমাণ প্রয়োজন মত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হবে।’’ অন্বয় নায়েকের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপনও করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
রায়গড়ের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জয় পাতিল জানিয়েছেন, মৃত অন্বয় নায়েকের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে রিপাবলিক টিভির অর্ণব গোস্বামী, আইকাস্টএক্স/স্কিমিডিয়ার ফিরোজ শেখ এবং স্মার্ট নেটওর্য়াকের নীতীশ সারদার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে । তিনি জানিয়েছেন, ‘‘মৃত ব্যক্তি তাঁর সুইসাইড নোটে এই তিনজনের সঙ্গে কাজর কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, এই তিনজন বকেয়া না মেটানোয় অন্বয়ের ব্যবসার প্রচুর ক্ষতি হয়েছিল।’’
আরও পড়ুন, কর্নাটকে ‘মৃত’ বিজেপি নেতা অশোক পূজারি আজও বহাল তবিয়তে বেঁচে!
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, আলিবাগে অন্বয় নায়েকের একটি বাংলো ছিল। শুক্রবার সন্ধেয় মা কুমুদ দেবীর সঙ্গে আলিবাগের বাংলোয় আসেন তিনি। শনিবার সকালে স্থানীয় মানুষজন বাড়ির নীচের তলায় কুমুদ দেবীর মৃতদেহ দেখতে পান। দোতলা থেকে উদ্ধার হয় অন্বয়ের ঝুলন্ত মৃতদেহ।
এলাকাবাসীর দুজনকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাঁদের সেখানে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। এএসপি সঞ্জয় পাতিল জানিয়েছেন, ‘’এখনও পর্যন্ত কুমুদ দেবীর মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা কাটেনি। আমরা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি।’’
এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। সমস্ত নথিপত্র, এবং যেসব বিল বকেয়া রয়েছে বলে অভিযোগ, সেগুলি খতিয়ে দেখেই পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে।