কাঠুয়া ধর্ষণ মামলার তদন্তে ছিল কাশ্মীর পুলিশের স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিম বা সিট। সেই সিটের সদস্যদের বিরুদ্ধেই এবার এফআইআর দায়েরের নির্দেশ দিল আদালত। মঙ্গলবার এই নির্দেশ দেয় জম্মুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালত।
আট বছরের কন্যাকে কাঠুয়ায় ধর্ষণ করে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছিল। কাশ্মীর পুলিশের ছয় সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয় এই ধর্ষণ ও খুনের মামলায়। সিট গঠনের নির্দেশ দেয় জম্মু-কাশ্মীরের তৎকালীন পিডিপি-বিজেপি সরকার। সিটের সেই ছয় সদস্যের বিরুদ্ধেই এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
আরও পড়ুন: ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পিএফ অফিসারের ২.৮৯ কোটির সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করল ইডি
কাঠুয়ার বাসিন্দা আবেদনকারী শচীন শর্মা, নীরজ শর্মা ও সাহিল শর্মী জানান, অভিযুক্তের দোষ প্রমাণে সিটের গোয়ন্দারা অভিযুক্ত বিশাল জঙ্গোত্রার বিরুদ্ধে মিথ্যে সাক্ষ্য দিতে, সাক্ষ্যদানকারীদের উপর তাঁরা বলপ্রয়োগ করেন। জোর করে মিথ্যে বলতে বাধ্য করেন। শারীরিক অত্যাচারও করা হয়। এর বিরুদ্ধে গত ২৪ সেপ্টেম্বর তারা অভিযোগ দায়ের করেন পাক্কা ডাঙ্গা থানায়। সেই অিযোগের ভিত্তিতেই জম্মুর মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতের এই নির্দেশ।
আগামী ৭ই নভেম্বর এই মামলার পরবর্তী শুনানি। তার আগেই পুলিশকে কার্যকর করতে হবে আদালতের নির্দেশ। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের কাছে যা বেশ অস্বস্তির বলে মনে করা হচ্ছে।
কাঠুয়া গণধর্ষণ মামলার তদন্তে গঠিত সিটের প্রধান ছিলেন রমেশ কুমার জল্লা। এছাড়া বাকি পাঁচ পুলিশ অফিসার হলেন পীরজাদা নাভিদ, শ্বেতাম্বরী শর্মা, আরফান ওয়ানি ও কেওয়াল কিশোরে। এদের মধ্যে একমাত্র মহিলা অফিসার হলেন শ্বেতাম্বরী শর্মা। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের অপরাধ দমন শাখার সঙ্গে এখনও যুক্ত রয়েছেন নাসির হুসেন। রমেশ কুমার জল্লা অবসর নিয়েছেন। পীরজাদা নাভিদ রাষ্ট্রসংঘের মিশনে রয়েছেন সুদানে। এসএসপি জম্মু তেজেন্দর সিং ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশের কপি হাতে না পাননি। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নির্দেশ বিষয় শুনেছেন। নির্দেশ হাতে পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: বাংলায় আটক কেন্দ্র তৈরির প্রশ্নই নেই: মুখ্যমন্ত্রী
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে কাঠুয়ায় ৮ বছর বয়সী এক নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ করা হয়। তারপর প্রমাণ লোপাটের জন্য দুষ্কৃতীরা নাবালিকাকে খুন করে দেহ মাটিতে পুঁতে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। ওই বছরের ৩১শে মে মামলাটি আদালতে ওঠে । প্রায় একবছর ধরে আদালতে প্রত্যেকদিন শুনানির চলে মামলাটি। আদালত অভিযুক্ত সাতজনের মধ্যে ছ'জনকেই দোষী সাব্যস্ত করে। এই ধর্ষণের ঘটনায় দেশজুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।
এরই মাঝে কাঠুয়া ধর্ষণ ও হত্যামামলা পাঠানকোট আদালতে স্থানান্তরের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত এ ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি নাকচ করে দেয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছিলেন, বিলম্ব এড়াতে ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে প্রতিদিন এই মামলার শুনানি হবে। একইসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট মামলার প্রক্রিয়া গোপনে চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
Read the full story in English