‘আমাদের অতি পরিচিত প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে আমাদের আসন্ন ছাত্রদের দিগ্ভ্রষ্ট করা’-র অভিযোগ এনে অাসামের এক নাম করা প্রকাশন সস্থা ও তিন লেখকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কারণ সে বইয়ে ২০০২ সালের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নিয়ে নরেন্দ্র মোদী নেতৃত্বাধীন গুজরাট সরকারকে নিয়ে একটি লাইন লেখা হয়েছিল।
এনসিইআরটি-র নির্দেশিত পাঠক্রম অনুসারে লিখিত এই রেফারেন্স বইটির প্রকাশক গুয়াহাটির আসাম বুক ডিপো নামের এক প্রকাশন সংস্থা। ৩৯০ পৃষ্ঠার এই বইটি ২০১১ সাল থেকে আসাম উচ্চ শিক্ষা সংসদের পাঠক্রমে পড়ানো হয়ে আসছে।
আসাম বুক ডিপো ৯০ বছরের পুরনো প্রকাশন সংস্থা। এই বইয়ের তিন লেখক হলেন, গুয়াহাটির আর্য বিদ্যাপীঠ কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিলেবে অসরপ্রাপ্ত দুর্গাকান্ত শর্মা, যিনি কয়েক বছর আগে মারা গেছেন। দ্বিতীয়জন গোয়ালপাড়া কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক রফিক জামান, এবং গুয়াহাটির অদূরে মির্জা এলাকায় অবস্থিত ডিকে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বর্তমান বিভাগীয় প্রধান মানস প্রতিম বড়ুয়া।
তিন লেখক ও প্রকাশন সংস্থার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩ এ, ৫০৫ এবং ৩৪ ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০০৬ সালে। তার শেষ অধ্যায়ে 'গোধরা ঘটনা এবং গুজরাটের মুসলমান-বিদ্বেষী দাঙ্গা' শীর্ষক উপঅধ্যায়ে লেখা হয়েছে, ’’এই (ট্রেনের কামরা জ্বালানোর) ঘটনায় নারী ও শিশু সহ ৫৭ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পিছনে মুসলিমরা রয়েছে এই সন্দেহে পরদিন থেকে গুজরাটের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিমদের নির্মমভাবে হত্যা করা হতে থাকে। এই হিংসা প্রায় এক মাস ধরে চলেছিল, যাতে একহাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। মৃতদের মধ্যে অধিকাংশই ছিলেন মুসলিম। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই হিংসা চলার সময়ে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার নীরব দর্শকের ভূমিকা নিয়েছিল। এমনকি রাজ্য প্রশাসন হিন্দুদের সমর্থন করেছিল বলেও অভিযোগ রয়েছে।’’