উত্তর প্রদেশের মোরাবাদ কোর্টে বিয়ের রেজিস্ট্রি করতে এসেছিল এক দম্পতি। জানতে পেরেই সেখানে উপস্থিত হয় হিন্দু যুব বাহিনীর সদস্যরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। আটকে যায় বিয়ে। বরের বিরুদ্ধে ধর্মান্তকরণ বিরোধী আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এছাড়াও, মহিলাকে অপহরণেরও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মোরাদাবাদের সিভিল লাইনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাগর জৈন বলেছেন, 'পুলিশের তরফে ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইপিসি-র ৩৬৩ ধারা(অপহরণের শাস্তি), ৩৬৬ ধারা (মবিলাকে বিয়েতে বাধ্য করার জন্য অপহরণ বা প্ররোচিত করা) ও ইউপি প্রিভেনশন অফ আনলফুল কনভার্সন অফ রিলিজিয়ন অ্যাক্ট, ২০২১ সালের আইনের ৩-৫ ধারার অধীনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্ত করার সময় অভিযুক্ত ব্যক্তিকে তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। মহিলাকে লুধিয়ানায় তাঁর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত শেষ হলে আমরা উপযুক্ত আইনি পদক্ষেপ করব।'
কেন ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্মান্তর বিরোধী আইনের ধারা কার্যকর করা হল? জবাবে পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন যে, 'প্রাথমিকভাবে, আইন লংঘন করা হয়েছে। আমাদের তদন্ত এখনও চলছে।'
সোমবার বিকেলে, হিন্দু যুব বাহিনীর একদল সদস্য এই দম্পতিকে কালেক্টরেট কম্পাউন্ডের বাইরে চিহ্নিত করে। ব্যক্তির বিরুদ্ধে লাভ জিহাদের অভিযোগ তুলেছে। দম্পতিকে যখন মোরাদাবাদ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয় তখন বাহিনীর সদস্যরা 'জয় শ্রী রাম স্লোগান' দিয়েছিল।
পুলিশ সুপার সাগর জৈনের কথায়, 'এই দম্পতি আদালতে তাঁদের বিবাহ নিবন্ধকরণের চেষ্টা করছিলেন। তখনই হিন্দু যুব বাহিনী তাঁদের ধরে ফেল। পুলিশকে খবর দেয়। জানতে পারা গিয়েছে যে, বর-বউ ভিন্ন ধর্মের। এরপরই বাহিনীর এইআইআরের ভিত্তিতে বিয়েটি আটকানো হয়েছে। মহিলার বাবা-মাকে এবং লুধিয়ানা পুলিশকেও সব জানানো হয়েছে। লুধিয়ানা পুলিশের কাছে আগেই মেয়ের নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল।'
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে লুধিয়ানা থেকে এই মামলার তদন্তকারী অফিসার গুরুজিত সিং বলেছেন, 'মহিলাকে তাঁর বাবা-মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। আমরা ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা দায়ের করেছি। আমরা এই বিষয়টির তদন্ত করছি।'
মোরাদাবাদ পুলিশ জানিয়েছে যে, লোকটি শহরের কাটঘর এলাকার কারুলা অঞ্চলের বাসিন্দা। এর আগে লুধিয়ানার একটি দোকানে কাজ করেছিল, যেটি ওই মহিলার বাড়ির কাছে ছিল। সেখান থেকে তাঁদের সম্পর্ক হয়। চলতি মাসের দুজনে ১৪ তারিখ তাঁরা মোরাদাবাদ আসে। বিবাহ নিবন্ধনকরণের জন্য তাঁরা কোর্টেও পৌঁছাতেই সব ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়।
হিন্দু যুব বাহিনীর মোরাদাবাদ ইউনিটের প্রধান অঙ্কিত শর্মা বলেছেন, 'আমাদের সদস্যরা জানতে পেরেছিলেন যে কাটঘর এলাকার এক বাসিন্দা সোমবার মোরাদাবাদ আদালতে একজন হিন্দু মহিলার সঙ্গে বিয়ের রেজিস্ট্রি করার চেষ্টা করবে। আমরা এলাকা পুলিশকে খবর দিয়ে দম্পতিকে কালেক্টরেটের বাইরে আটক করি। এটা লাভ জিহাদ ছাড়া আর কিছুই নয়, যা হিন্দু যুব বাহিনী সহ্য করবে না।'
Read in English