গত বুধবার (৫.০১.২২)পঞ্জাবের ফিরোজপুরে বিক্ষোভের মুখে পড়েছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর কনভয়। ফ্লাইওভারে প্রায় ২০ মিনিট আটকে ছিলেন মোদী। খামতি প্রকট হয় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার। সেই ঘটনায় কুলগড়ি থানায় এফআইআর দায়ের করেছে পঞ্জাব পুলিশ। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের দ্রুত অনুসন্ধানে এই এফআইআর-ঘিরেও বেশ কয়েকটি খামতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। ওই এফআইআর-এ অজ্ঞাত পরিচয় দেড়শ ব্যক্তির নাম থাকলেও নেই স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে থাকার উল্লেখ।
ঘটনাটি ৫ জানুয়ারি ঘটলেও এফআইআর করা হয়েছে ৬ জানুয়ারি। পাঞ্জাব পুলিশের ইন্সপেক্টর বলবীর সিংয়ের নেতৃত্বে ওই এফআইআর দায়ের হয়। কিন্তু তাতে প্রধানমন্ত্রীর কনভয় আটকে থাকার কোনও উল্লেখ ছিল না। ইন্সপেক্টর বলবীরের দায়ের করা এফআইআর-এ উল্লেখ ছিল যে, বিক্ষোভের খবর পেয়েই দুপুর আড়াইটে নাগাদ তিনি ফিরোজপুর-মোগা হাইওয়ের মাঝে পেয়ারেয়ানা ফ্লাইওভারে কাছে গিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, বিকাল ৩টে ২০ মিনিট নাগাদ প্রধানমন্ত্রী ভাটিন্ডা থেকে নয়াদিল্লিতে ফিরে যান। খবরে বলা হয়েছে, দুপুর ১.১৫ থেকে ১.৩৫ পর্যন্ত মোদীর কনভয় ফ্লাইওভারে আটকে ছিল। তবে, ইআইআর-এ উল্লেখ রয়েছে যে, ইন্সপেক্টর ধর্নাস্থলে গিয়ে জানতে পারেছিলেন যে বিক্ষোভের জেরে ফিরোজপুরের সমাবেশের দিকে যাওয়া যানবাহন এবং কিছু ভিআইপির গাড়ি আটকে রয়েছে।
এফআইআর-এই নাম রয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় দেড়শ ব্যক্তির নাম রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৮৩ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তায় গাফলতির বিষয়টি জাতীয় রাজনীতিতে ঝড় তুলেছে। তা সত্ত্বেও পঞ্জাব পুলিশের এফআইআর-এ কেন তার কোনও উল্লেখ নেই? তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি। পাঞ্জাবের বিজেপি সভাপতি অশ্বীনি শর্মা বলেছেন, 'পুলিশি এফআইআর-এ মোদীর কনভয় আটকে থাকার উল্লেখ তো নেই, বরং অজ্ঞাত পরিচয় যে ব্যক্তিদের নাম সেখানে রয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে আইপিসি-র ২৮৩ ধারায় জামিনযোগ্য অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এটাই প্রমাণ করছে যে সেদিন পাঞ্জাব সরকার যড়যন্ত্র করেছিল।' তাঁর প্রশ্ন, 'প্বিক্ষোভকারীদের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে এবং তাঁরা সংবাদ মাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল। এরপরও অজ্ঞাতপরিচয়দের বিরুদ্ধে কীভাবে এফআইআর হয়?'
সেদিন প্রধানমন্ত্রীর যাওয়ার পথে কৃষকদের বিক্ষোভ প্রদর্শনেই আটকে যান কনভয়। ওই ঘটনার দায় স্বীকার করেছিল ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ানের (ক্রান্তিকারী)। সংগঠনের দাবি, তাদের বিক্ষোভেই শেষ পর্যন্ত মোদীকে দিল্লি ফেরৎ যেতে হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি সুরজিৎ সিং ফুল প্রধানমন্ত্রীর কনভয় রুখে দেওয়ার জন্য এক ভিডিও বার্তায় বিক্ষোভকারী কৃষকদের অভিনন্দনও জানিয়েছিলেন। ঘটনার দিন রাতে আরেকটি ভিডিও বার্তায় ফুল দাবি করেন যে, 'আমাদের প্রতিবাদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে আমাদের সংগঠন আর্থিক দুরাবস্থায় রয়েছে। তাই আমি ভারত ও বিদেশে থাকা মানুষদের থেকেও সাহায্য পাঠানোর আদেন জানাচ্ছি। কৃষখ আন্দোলনের সময় যে তহবিল গড়া হয়েছিল তা শেষ। এবার অন্য এক সংগ্রামের মুখোমুখি হতে চলেছি আমরা। সেই সংগ্রাম জারি রাখতে আাদের অর্থের প্রয়োজন।'
Read in English