বুধবার তখন সন্ধে সাড়ে সাতটা। দাউ দাউ করে জ্বলে উঠল বাগবাজার ব্রিজের কাছে বস্তি। উত্তুরে হাওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। ফলে অল্প কিছুক্ষণেই পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এক ঘন্টার মধ্যেই বস্তির সম্পূর্ণ অংশ পুড়ে যায়। এই বস্তির পাশেই রয়েছে মায়ের বাড়ির অফিস ঘর। সেখানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পুড়ে গিয়েছে অফিসের আসবাবপত্র। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় গোটা এলাকা। ২৭টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও বিধ্বংসী আগুনে ছাদহারা হয়েছে বহু মানুষ। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর তড়িঘড়ি সেই গৃহহারা বস্তিবাসীদের ঘর বানিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন মুখ্য প্রশাসক তথা পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)।
বৃহস্পতিবার থেকেই শুরু হবে নতুন ঘর তৈরির কাজ, জানিয়ে দেন ফিরহাদ। আগুন লাগার খবর কানে আসতেই এদিন রাতে সাগরমেলা থেকে কলকাতায় রওনা দেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ঘটনাস্থলে পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা হলেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে আশ্বাস দেন যে, "মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে। আপাতত অস্থায়ী শিবিরে খাওয়া-থাকার ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।" রাতের আশ্রয়ের জন্য চারটি কমিউনিটি হল খুলে দেওয়া হয়েছে। বাগবাজার উইমেন্স কলেজে অস্থায়ী শিবির খোলা হয়েছে রাতেই।
সেখানে যান মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও। বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল-সহ স্থানীয় কাউন্সিলরও গিয়েছিলেন। তবে বিক্ষোভের মুখে পড়ে যদিও তাঁরা ফিরে আসতে বাধ্য হন।
প্রসঙ্গত, আগুনের জেরে বুধবার সন্ধেয় ওই রাস্তায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ দিয়ে গিরিশপার্ক থেকে উত্তরমুখী যান চলাচলও নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রাস্তায় নামে ব়্যাফ। আগুনের জেরে বস্তি থেকে প্রতিনিয়ত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণেরও শব্দ শোনা যায়। ঘটনার পর পুলিশ এলে স্থানীয়রা তাদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। অভিযোগ, খবর দেওয়ার বেশ কিছুটা পরে দমকল বাগবাজার বস্তিতে পৌঁছেছে। ফলে আগুন ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এপ্রসঙ্গে দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর মন্তব্য, "আমি গঙ্গাসাগরে রয়েছি। কিন্তু খবর পেয়েই দফতরের ডিজির সঙ্গে কথা হয়েছে। দমকল কর্মীরা আগুন দ্রুত নেভাতে সবধরণের চেষ্টা করেছে বেশ কয়েজন দমকল কর্মী আহত হয়েছেন।"