এবার স্বাধীনতা দিবসে বাড়তি আনন্দ ফ্লিপার ও মিঃ. মোল্টের সংসারে। বাড়তি আনন্দ হবে না! ফ্লিপার মা হল যে! এ তো আর যেমন তেমন ব্যাপার নয়। বাবা হওয়ার আনন্দে খুশিতে ডগমগ মিঃ. মোল্টও। স্বাধীনতা দিবসেই শেষ পর্যন্ত অপেক্ষার অবসান। ঘড়ির কাঁটা তখন ৮টা বেজে ২ মিনিট, সেই সময়ই যেন মাহিন্দ্রক্ষণে পরিণত হল মুম্বইয়ের বাইকুল্লা জেলে। ফ্লিপার ও মোল্ট পেরেন্টহুড পেল। ফ্লিপার ও মিঃ. মোল্টের হাত ধরে বাইকুল্লা চিড়িয়াখানার পাশাপাশি এক বিরল মুহূর্তের সাক্ষী হল গোটা দেশ। এই প্রথমবার এ দেশে জন্ম নিল পেঙ্গুইন। হ্যাঁ, ফ্লিপার ও মিঃ. মোল্ট আদপে দুই পেঙ্গুইন, যাদের সূদুর সিওল থেকে ২০১৬ সালে বানিজ্যনগরীতে আনা হয়।
কেমন আছে ওই সদ্যোজাত? জবাবে পশু চিকিৎসক মধুমিতা কালে বললেন,‘‘সুস্থই আছে পেঙ্গুইনটি। ওর মায়ের সঙ্গেই রয়েছে সে।’’ অন্যদিকে, পেঙ্গুইনের পরিবারে নতুন এই সদস্যের নামকরণের জন্য ইতিমধ্যেই চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষকে বিভিন্ন নাম প্রস্তাব করে চিঠি দিয়েছেন এক পশু প্রেমিক।
জুলাই মাসের কথা, সে মাসের ৮ তারিখে মোল্টের সন্তানের ডিম পেড়েছিল ফ্লিপার। ডিম ফুটে বাচ্চা হওয়ার সময়সীমা মোটামুটি ৪০ দিন। হিসেব অনু্যায়ী, গতকালই ছিল সেই সময়সীমা। এ প্রসঙ্গে বাইকুল্লা চিড়িয়াখানার ডিরেক্টর সঞ্জয় ত্রিপাঠী জানিয়েছিলেন যে গতকাল ও আজকের মধ্যেই ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোবে।
দেশে প্রথমবার কোনও পেঙ্গুইন জন্মানো ঘিরে যথেষ্ট তৎপর ছিল চিড়িয়াখানা কর্তপক্ষ। পশু চিকিৎসকদের একটা দল তৈরি করা হয়েছিল, যাঁরা নিয়মিত ডিমটি পর্যবেক্ষণে রেখেছিলেন। এমনকি প্রয়োজনে বিদেশের চিকিৎসকদেরও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছিল। ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোনোর ভিডিও দেখেওছিলেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, এ সপ্তাহের যে কোনও দিন পেঙ্গুইনের জন্ম হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন চিড়িয়াখানার প্রধান পশু চিকিৎসক ডাঃ. মধুমিতা কালে।
আরও পড়ুন, World Elephant Day: নবরূপে হাতিঘরের গৃহপ্রবেশ হল চিড়িয়াখানায়
এদিকে ডিম পাড়ার পর থেকেই নিজেদের ভাবী সন্তানকে চোখে চোখে রাখছিল হবু বাবা-মা। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, কখনও কখনও ৩-৪ দিন ডিমে তা দিয়েছে ফ্লিপার। এমনও হয়েছে যে, নাওয়া-খাওয়া কার্যত ভুলেছিল ভাবী মা। ফ্লিপারের মতো হবু বাবাও কিন্তু ডিমে তা দিচ্ছিল।
চিড়িয়াখানার এক কর্মী জানালেন, "ডিম ফুটে বাচ্চা বেরোলে, প্রথমে সদ্যোজাতকে কমপক্ষে তিন মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। ওই সময়ে ওর বাবা-মাই ওর খাবার দেবে। তিন মাস পর অবশ্য ওই খুদে পেঙ্গুইন নিজেই নিজের খেয়াল রাখতে পারবে।" এই মুহূর্তে বাইকুল্লা চিড়িয়াখানায় ৭টি পেঙ্গুইন রয়েছে। এর আগে ডোরি নামের একটি পেঙ্গুইন ২০১৬ সালে মারা যায়।