অবশেষে ঘরে ফেরা। লকডাউনে প্রথম ট্রেন চলল ১০০০ পরিযায়ী শ্রমিককে নিয়ে। তেলেঙ্গার লিঙ্গামপল্লি থেকে ভোর পাঁচটা নাগাদ ঝাড়খণ্ডের হাতিয়ায় উদ্দেশে রওনা দেয় বিশেষ ট্রেনটি।
বাসের বদলে ট্রেনে করে পরিযায়ীদের রাজ্যে ফেরাননো হোক। কেন্দ্রের কাছে একাধিক রাজ্যে তরফে এই দাবি ঘিরেই চাপ বাড়ছিল। বৃহস্পতিবার রাতে রেল ও স্বারাষ্ট্রমন্ত্রক এ বিষয় বৈঠক করে। তারপরই শুক্রবার ভোর পাঁচটায় তেলেঙ্গানা থেকে হাজার পরিয়ায়ী শ্রমিককে নিয়ে ট্রেন ঝাড়খণ্ডের দিকে রওনা হয়। পরিয়ায়ীদের ফেরাতে আরও বেশ কয়েকটি ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে রেলমন্ত্রক জানিয়েছে যে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে এটি রেলের বিশেষ পদক্ষেপ ছিল।এর পুনরাবৃত্তি হবে কিনা তা রেলমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে।
নন-স্টপ ট্রেনটি কেবল ক্রু পরিবর্তন এবং জল সরবরাহের জন্যই কয়েকটি জায়গায় থামবে বলা জানানো হয়। যাত্রীরা পারস্পরিক দূরত্ব বিধি মেনে যাত্রা করছেন কিনা তা নজরদারির জন্য ওই ট্রেনে আরপিএফ মোতায়েন রয়েছে। তার আগে রেলের কামরা জীবাণুমুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন- করোনায় থমকে অর্থনীতি, বিনিয়োগ টানতে মরিয়া মোদী
দু'দিন আগেই বাসে করে পরিয়ায়ীদে শ্রমিকদের নিজ নিজ রাজ্যে ফেরাতে নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্র। এ ক্ষেত্রে বাসের বন্দোবস্ত করতে হবে রাজ্যকেই। কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের বদলে ট্রেনের আয়োজন করার দাবি জানায় রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড সহ একাধিক রাজ্য। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন রেলমন্ত্রী পীযুষ গোয়েলের সঙ্গে কথাও বলেন। ওই রাজ্যের প্রায় ৯ লাখ শ্রমিক পরিযায়ী। এদের মধ্যে বেশিরভাগই দক্ষিণ ভারতে থাকেন। বৃহস্পতিবার বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রীও পরিযায়ীদের রাজ্যে ফেরাতে ট্রেনের দাবি জানান।
গতকালই জানা যায় যে, রেলমন্ত্রকও পরিযায়ীদের ঘরে ফেরাতে একটি পরিকল্পনার খসড়া প্রস্তুত করেছে । রেলের পরিকল্পনা অনুসারে, প্রতিটি নন-এসি ট্রেন সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে প্রতিটি ভ্রমণে ১০০০ জন করে নেওয়া হবে। সরকারি এক আধিকারিক বলেছিলেন, “প্রতিটি বাসে ২৫ জনের বেশি নেওয়া যাচ্ছে না। রেলের নিয়ম মেনে রাজ্যেকেও স্ক্রিনিং করতে হবে।”
আরও পড়ুন- লকডাউন উঠবে কীভাবে? ৬ পথ দেখাল নীতি আয়োগ
রেলমন্ত্রকের মুখপাত্র আর ডি বাজপেয়ী জানিয়েছেন, 'শুক্রবার ভোরে বিশেষ একটি ট্রেন পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে লিঙ্গামপল্লি থেকে ঝাড়খণ্ডের হাতিয়ার উদ্দেশে রওনা হয়েছে। তেলেঙ্গানা সরকারের আর্জির ভিত্তিতে রেলমন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই যাত্রাকে কেন্দ্র করে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখা, মাস্ক ব্যবহার, স্ক্রিনিং সহ সব সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।'
রেলমন্ত্রকের তরফে বলা হয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরাতে এটি রেলের বিশেষ পদক্ষেপ ছিল। তবে এর পুনরাবৃত্তি হবে কিনা তা রেলমন্ত্রকের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা যে রাজ্যে আটকে পড়েছেন ও যে রাজ্যের তাঁরা বাসিন্দা- উভয় রাজ্য সরকারের আর্জির ভিত্তিতে রেলের সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন