কেন্দ্রীয় সরকারের কোস্টাল রেগুলেশন জোন নোটিফিকেশনের নয়া নোটিস নিয়ে আপত্তি তুলল রাজ্যের মৎস্যজীবীদের দুটি সংগঠন। নোটিসের একাধিক বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা শাসকের দফতরে চিঠি দিয়েছে কাঁথি মহকুমা খটি মৎস্যজীবী ইউনিয়ন ও দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরাম।
এবছর এপ্রিলে জারি হওয়া নোটিস সম্পর্কে আপত্তি জানিয়ে দক্ষিণবঙ্গ মৎস্যজীবী ফোরামের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, এই নোটিফিকেশন লাগু হলে উপকূল এলাকার মৎস্যজীবীদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট দেবাশিস শ্যামল জানিয়েছেন, "নতুন নোটিফিকেশনে মৎস্যজীবীদের স্বার্থরক্ষার বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ নীরব। এই খসড়ায় ১৯৮৬ সালের পরিবেশ (সুরক্ষা) আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। ওই আইনে বলা হয়েছিল পরিবেশের মানোন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে সমস্ত রকম ব্যবস্থা নিতে হবে। এখন যে কোস্টাল রেগুলেশন জোন নোটিফিকেশন লাগু রয়েছে, তা ২০১১ সালের। সেখানে বলা রয়েছে, বিপজ্জনক জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করতে হবে, জীবনযাত্রার রক্ষণাবেক্ষণ ঘটাতে হবে এবং অবাধ উন্নয়ন প্রকল্প বাতিল করতে হবে। ২০১৮ সালের খসড়া সিআরজেড নোটিফিকেশন সম্পূর্ণ উল্টোপথে হাঁটছে। সমস্ত সুরক্ষাকবচ সরিয়ে দিয়ে, উন্নয়নপ্রকল্পে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে এবং সাগরমালা কর্মসূচির জন্য পথ খুলে দেওয়া হচ্ছে।"
পরিবেশবিদ সৌমেন্দ্র মোহন ঘোষকে এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, "সংরক্ষিত এলাকায় নির্মাণকাজ হলে তার ফলে বায়ু, পরিবেশ ও শব্দদূষণ হতে বাধ্য।" রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহা বলেছেন, "আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। কিন্তু প্রথমে নতুন নোটিফিকেশনে কী আছে, তা আমাদের ভালোভাবে দেখতে হবে।" প্রয়োজনে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হবে বলে বলে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম ডিএনএ-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোস্টাল রেগুলেশন জোনের বিধিনিষেধ বদলানোর জন্য কয়েক মাস আগে কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রকের কাছে দরবার করেছিলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। সমুদ্রতীরের ৫০০ মিটারের মধ্যে কোনওরকম নির্মাণকাজ নিষিদ্ধ বলে যে নিয়ম লাগু আছে, তা বদলানোর প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত, খসড়া সিআরজেডে বাস্তুতন্ত্রের দিক থেকে সবচেয়ে অরক্ষিত যেসব এলাকার তালিকা করা হয়েছে, তার শীর্ষে রয়েছে পশ্চিবঙ্গের সুন্দরবন এলাকা।